বগুড়া দুপচাঁচিয়া গুনাহার ইউপি হত-দরিদ্রদের চাল বিতরনে চেয়ারম্যান খালেকের বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ

অপরাধ

মতিন খন্দকার টিটু :
বগুড়ার দুপচাঁচিয়া উপজেলার গুণাহার ইউনিয়নের হতদরিদ্রদের চাল নিয়ে অনিয়ম করায় উপজেলা নির্বাহী অফিসার এস এম জাকির হোসেনের বরাবর অভিযোগ দেয়া হয়েছে। ভুক্তভোগী হবিবর, সুন্দরী, আরিফুল ইসলাম, নেহেরা, রওশন আরা, জাহিদুল ও মোসলেম উদ্দিনের মতো শত শত পরিবারের অভিযোগ তাদের নিজ নিজ নাম খাদ্যবান্ধব কর্মসূচীর আওতায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে কিন্তু তারা কেউ একবার, কেউ ২ বার চাল পেয়েছে: কেউবা আবার পায়ইনি। ২০১৬ সাল থেকে একইভাবে মৃত ব্যক্তি, বিদেশরতদের নামে কার্ড করে ভূয়া টিপসই নিয়ে শত শত মানুষের চাল হজমের অভিযোগ গুনাহার ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শাহ মোহাম্মদ আব্দুল খালেক ও তার মনোনিত ডিলার আব্দুল হাকিম ও লিখন-এর বিরুদ্ধে। অভিযোগের সূত্র ধরে সরেজমিনে গিয়ে এলাকার সাধরন মানুষের মধ্যে চেয়ারম্যান শাহ মোহাম্মদ আব্দুল খালেকের বিরুদ্ধে চরম অসন্তোষ লক্ষ্য করা গেছে। শুধুমাত্র ইউনিয়নের ২ নং ওয়ার্ডের ৩০৩ নং কার্ডে মৃত আককাছ আলী, ১৩০১ কার্ডে মৃত আব্দুর রাজ্জাক,৩১৯ নং কার্ডে বিদেশরত শাহিনুর পর্যায়ক্রমে, ২১৬, ৩৪১, ৩৪২,৩২০ নং কার্ডের নামধারীরা বিভিন্ন দেশে কর্মরত। ৯০ ,২৯০ নং কার্ডধারীরা ঢাকায় বসবাসকারী, এছাড়াও ৩৪৩,১৯৮,১৯৯,২০৩,৩৩৭,২৩১,২৮০ যাদের কোন পরিচয় পাওয়া যায়নি তবুও তাদের নামে কার্ড হয়েছে। এমন অসংখ্য অভিযোগ বিভিন্ন ওয়ার্ডের মানুষের। ভুক্তভোগী ৯নং ওয়ার্ডের সুন্দরী জানান, তিনি এমাসেই প্রথম ৩০ কেজি চাল পেয়েছেন। অথচ তার কার্ডে রয়েছে ২০১৬ সাল থেকে ১৪ বার চাল উত্তোলন করার টিপসই। একইভাবে ৪ নং ওয়ার্ডের আমঝুপির মেহেরুলের স্ত্রী মোসলেমা ২বার চাল পেয়েছেন, ৬২৬ কার্ডে জাহিদুল, ২১৮ কার্ডে নুরনবী, ২৭২ কার্ডে রওশন আরা ১- ২ বার পেয়েছেন। মহাতাব ৩নং ওয়ার্ড পেয়েছেন ৭বার এরকম প্রতিটি ওয়ার্ডে শত শত মানুষ করোনা ভাইরাসে কর্মহীন হওয়ায় চেয়ারম্যানের দ্বরস্থ হলেও তিনি কোন প্রতিকার করেননা। কথা বললে তাদের দূর দূর করে তাড়িয়ে দেন। একই ভাবে তালুচ পশ্চিমপাড়ার ষাটোর্দ্ধো বিধবা বৃদ্ধা মৃত মজিবরের স্ত্রী ফিরোজার অভিযোগ, ইউনিয়ন পরিষদ থেকে তিনি কিছুই পাননা। কত বছর হলে তার বিধবা বা বয়স্ক ভাতা পাবে? এদিকে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুর রশিদ বলেন, বাংলাদেশ সরকারের প্রধানমন্ত্রীর কঠোর নির্দেশ কোন মানুষ যেন না খেয়ে থাকে। এজন্য সব রকম ব্যবস্থা করার নির্দেশ দিয়েছে রাজনৈতিক ও দলীয় নেতাকর্মীদের। অথচ আমাদের গুনাহার ইউনিয়নের তিন থেকে ৪শত মানুষের কার্ড নিয়ে জালিয়াতি করা হয়েছে। যারা খাবার পাচ্ছেনা, কর্মহীন হয়ে আমার কাছে বার বার অভিযোগের ঝুলি নিয়ে আসছে। মানুষের ক্ষুধার অন্ন যারাই কেড়ে নিয়েছে তাদের বিরুদ্ধে অবশ্যই ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। এদিকে সব অভিযোগ অস্বিকার করে গুনাহার ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শাহ মোহাম্মদ আব্দুল খালেক বলেছেন, কিছু ভুলক্রুটি থাকতে পারে তবে সেগুলো সংশোধনের জন্য দেয়া হয়েছে। অপরদিকে অভিযোগ সম্পর্কে দুপচাঁচিয়া নির্বাহী অফিসার এস এম জাকির হোসেন জানিয়েছেন, অভিযোগ পেয়ে খাদ্য কর্মকর্তাকে তদন্তের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। তদন্তে সত্যতা পাওয়া গেলে ডিলারশিপ বন্ধ করা হবে। একই সাথে যারাই জড়িত থাক তাদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেয়া হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published.