বগুড়ায় মোবাইলে প্রেমের টানে বগুড়ায় এসে ধর্ষনের শিকার এক কিশোরী ধর্ষক আটক

অপরাধ

মতিন খন্দকার টিটু :
গাজিপুর জেলার জয়দেবপুর থানার অষ্টম শ্রেণির হাবাগোবা টাইপের এক কিশোরী মোবাইলে মিসকলের সূত্রে প্রেমে পড়েছিল বগুড়ার এক লম্পটের। মেয়েটি কথাও ঠিকমত বলতে পারে না এবং চোখেও কম দেখে। বেশ কয়েকমাস কথাবার্তা হওয়ার প্রেক্ষিতে মেয়েটার সেই লম্পটের প্রতি বেশ দূর্বল হয়ে যায়। ১৪ ফেব্রুয়ারি ভালবাসা দিবসের সন্ধ্যায় একটু বেশিই কথা হয় তাদের মধ্যে। টিন এজের মেয়েটি যাদের ব্রেনের চেয়ে আবেগ বেশি কাজ করে পরের দিন ১৫ ফেব্রুয়ারি ছেলেটার সাথে দেখা করার জন্য উতলা হয়ে স্কুলের নাম করে গাজিপুর থেকে বগুড়ার গাড়িতে চেপে বসে। আসার সময় সে তার মায়ের ফোন যেটা দিয়ে সে কথা বলত সেটাও নিয়ে আসেনি।
বগুড়া এসে মেয়েটি পাশের যাত্রীর ফোন থেকে তার কথিত প্রেমিকের সাথে যোগাযোগ করে মাটিডালি মোড়ে দেখা করে। পরের ঘটনা পাঠক অনুমান করতে পারছেন। সেই ছেলেটি মেয়েটার সাথে কিছুক্ষণ ঘুরাঘুরি করে ,তাকে মহাস্থানগড় নিয়ে যায় এভাবে সন্ধ্যা লেগে যায়। সন্ধ্যার পর সে মেয়েটিকে নিয়ে যায় তার বাড়ির পাশের জঙ্গলের ভিতরে, সেখানে সে মেয়েটিকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে। ধর্ষণে রক্তাক্ত মেয়েটিকে নিয়ে সে অন্ধকারে কিছুক্ষণ জঙ্গলের ভিতরেই ঘুরাঘুরি করে। মেয়েটি অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে নিয়ে টিএমএসএস মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায় কিন্তু হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ অবস্থা বুঝতে পেরে তাকে সরকারি হাসপাতালে যেতে বললে সেই লম্পট মেয়েটিকে নিয়ে মাটিডালি মোড়ে রেখে পালিয়ে যায়।
মাটিডালি মোড়ের লোকজন মেয়েটিকে দেখে থানায় জানালে পুলিশ গিয়ে মেয়েটিকে উদ্ধার করে থানায় এনে মামলা রুজু করে শজিমেক হাসপাতালের One Stop Crisis Centre (OCC) তে ভর্তি করে।
মামলা রেকর্ড হবার পর তদন্তের দায়িত্ব পরে ফুলবাড়ি ফাড়ির এসআই শহীদুল ইসলামের উপর। কিন্তু ফুলবাড়ি ফাড়ির আইসি সফিক, ওসি সদরসহ সবাই উঠেপড়ে লাগে ঘটনার সাথে জড়িত ব্যক্তিকে সনাক্ত এবং আটক করতে। মেয়েটা ঠিকমতো কথাও বলতে পারে না, জায়গার ব্যাপারেও সুনির্দিষ্ট করে কিছু বলতে পারে না। ভরসা বলতে ফোন নম্বর সেটাও বন্ধ। ছেলেটার নাম বলেছিল শুভ। মোবাইল ফোনের রেজিস্ট্রেশনে শুভ নামে কেউ নাই, ছবিও মেয়েটা সনাক্ত করতে পারল না।
টিম সদর থানা হাল ছাড়ার পাত্র না। অনেক কৌশল (সঙ্গত কারনে বর্ণনা করছি না) ব্যবহার করে সেই শুভকে ধরা হলো। দেখা গেল তার নাম শুভ নয় স্বপন,মাফিউল ইসলাম স্বপন(২৫) পিতা; জহুরুল ইসলাম গ্রাম; বাঘোপাড়া সুলতানপাড়া, থানাঃ সদর, জেলাঃ বগুড়া। ধরা পরার পর সে কোনমতেই স্বীকার করে না। অন্যের নামে রেজিস্ট্রেশন করা সিম ব্যবহার করে সে এই কুকর্ম করেছিল। মেয়েটাও তাকে ঠিকমতো সনাক্ত করতে পারছে না। ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদে সে আমাদের কাছে সমস্ত ঘটনা স্বীকার করল( সঙ্গত কারনে কৌশল বলছি না) এবং আজ ২১/২/২০২০ তারিখ সন্ধ্যায় বিজ্ঞাদালতে নিজের দোষ স্বীকার করে ফৌজ়দারি কার্যবিধির ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি প্রদান করেছে।
ঘটনা উদ্ঘাটনে বেশ কয়েকজন সহযোগিতা করেছেন তাদের নাম এখানে উল্লেখ করা যাচ্ছে না। এরকম কিছু পুলিশ ফ্রেন্ড এর জন্যই আমরা কাজ করতে পারি। জবানবন্দি প্রদানের সংবাদটা শোনার পর টিমের সবার যে অনুভতি হয়েছে তা প্রকাশ করার নয়। একটা হাবাগোবা কিশোরীর সর্বনাশের মূল হোতাকে ধরতে পেরে নিজেদের গর্বিতই মনে হচ্ছে। আমাদের টিম লিডার মোঃ আলী আশরাফ ভূঞা বিপিএম বার স্যারের নেতৃত্বে অপ্রতিরোধ্য গতিতে এগিয়ে চলেছে জেলা পুলিশ বগুড়া।

Leave a Reply

Your email address will not be published.