ঢাকার আশুলিয়া থানায় মিথ্যা গায়েবী মামলা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে দুই এস আই এমদাদ ও শেখ ফরিদের বিরুদ্ধে

অন্যান্য

পরোক্ষভাবে সাইবার ক্রাইমে সাংবাদিকের বিরুদ্ধে মামলা করার হুমকি

আশুলিয়া প্রতিনিধি :
গায়েবী মিথ্যা মামলা ও আজগুবি তদন্তে জামিনে থাকা আসামির জামিন নামার রিসিভ কপি (রিকল) ছিঁড়ে গ্রেফতার সহ একাধিক অভিযোগ উঠেছে ঢাকা জেলার শিল্পাঞ্চল এলাকায় আশুলিয়া থানার উপ- পুলিশ পরিদর্শক (এস আই) এমদাদ ও শেখ ফরিদের বিরুদ্ধে।

গত ২৩শে আগষ্ট – ২০২৩ ইং তারিখে এমন অভিযোগ করেন আশুলিয়ার নরসিংহ পুর নামা গোমাইলের বাসিন্দা ভুক্তভোগী মোঃ আবু বক্কর ও তার পরিবারের লোকজন। সম্প্রতি বিষয়টি গত ২৩ শে আগষ্ট আশুলিয়ার স্থানীয় কিছু সংবাদকর্মী সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে একটি তথ্য প্রকাশ করেন। যেখানে লেখা ছিলো
(আশুলিয়া থানা পুলিশ গ্রেফতারের পর হাতকড়া সহ দৌঁড়ে পালালেন আসামি, অতঃপর ৪ ঘন্টা পর আসামি ছাড়াই হাতকড়া উদ্ধার।)

এমন তথ্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মূহুর্তেই ছড়িয়ে পড়লে সংবাদ সংগ্রহ করতে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন স্হানীয় একাধিক সংবাদকর্মীরা। তবে সেখান থেকে উঠে আসে প্রত্যক্ষদর্শীদের ভিন্ন ভিন্ন তথ্য মতে এই যেন কেঁচো খুঁড়তেই সাপ বেড়িয়ে আসার মতো অবস্থা,

ভোক্তভোগী ও ঘটনার দিন প্রত্যক্ষদর্শীদের তথ্য মতে জানা যায়, গত ২২ শে আগষ্ট – ২০২৩ ইং তারিখে সাদা পোষাকে (সিভিল ড্রেস)আশুলিয়া থানা পুলিশের এস আই শেখ ফরিদ একজন জামিন কৃত আসামির (রিকল) জামিন নামার সত্যায়িত কপি ছিঁড়ে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ সহ জামিনে থাকা ব্যক্তিকে তার পরিহিত শার্টের কলার ধরে হাতকড়া পড়িয়ে আটক করেন। জামিনে থাকা আটককৃত আবুবকর কোন উপায় না পেয়ে হাতকড়া সহ দৌঁড়ে পালিয়ে যান।

এতে ক্ষিপ্ত হয়ে এবং ঘটনার দ্বায় এড়াতে শশুর বাড়িতে বেড়াতে আসা আবুবকরের চাচাতো বোনের জামাই মোঃ জহিরুল ইসলাম এবং তার ছোট ভাই মোঃ ইব্রাহিমকে ঘটনার দিন ২২ তারিখ মধ্য রাতে কোন প্রকার মামলা কিংবা ওয়ারেন্ট ছাড়াই গ্রেফতার করে আশুলিয়া থানায় নিয়ে যান এস আই এমদাদ ও শেখ ফরিদ,থানা নেওয়ার পর থেকে আটককৃত দুজনের সাথে তাদের স্বজনদের দেখা সাক্ষাত করার সুযোগ দেননি এবং আটককৃত জহিরুল ও ইব্রাহিমকে থানায় মারধর করেছেন বলে অভিযোগ করেন আটককৃত জহিরুলের স্ত্রী, পরদিন ২৩ তারিখ সকালের দিকে কৌশলে দুই এস আই নিজেদের অনিয়ম ঢাকতে স্হানীয় হাজী মঞ্জুরুল ইসলাম মন্ডল নামের এক ব্যাক্তিকে থানায় ডেকে নিয়ে এজাহারে বাদী উল্লেখ করে ১৬ জনকে আসামি সাজিয়ে একটি মিথ্যা গায়েবী মামলা দায়ের করান দুই এস আই এমদাদ এবং শেখ ফরিদ।

যাহার মামলা নং- ৫৩ তারিখ -২৩/০৮/২০২৩ ইং ধারা, ১৪৩,৪৪৭,৩২৩,৩৮৫,৩৭৯,৬০৬,৩৪ পেনাল কোর্টে রজু করা হয় এবং মামলার তদন্ত কর্মকর্তার দায়িত্ব নেন এস আই এমদাদ ।
উক্ত মামলার এজাহারে উল্লেখ রয়েছে একই আসামীদ্বয়ের বিরুদ্ধে দুইজন ব্যাতিত মোট ১৪ জন কে আসামি করে গত ১৯/০৮/২০২৩ ইং তারিখে আরও একটি মামলা দায়ের করেন, মোঃ সেলিম ভুঁইয়া নামের এক ব্যাক্তি । যাহার মামলা নং- ৩৮ তারিখ ১৯/০৮/২০২৩ ইং ধারা, ১৪৩,৪৪৭,৩২৩,৩৭৯,৪২৭,৬০৬ পেনাল কোর্ট এবং তদন্ত কর্মকর্তা দায়িত্বে ছিলেন এস আই শেখ ফরিদ।

জানা যায়,উল্লেখিত ৩৮ নং মামলার ধারা অনুযায়ী এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে
বাদী হাজী মঞ্জুরুল ইসলাম মন্ডল এর বায়না সূত্রে ক্রয়কৃত জমির উপর দেয়াল নির্মাণ করা কালীন সময়ে উক্ত বিবাদীরা নির্মাধীন দেয়াল ও পূর্বের ঘর ভাংচুর করেন এবং চাঁদা দাবী করেন। চাঁদার টাকা না দেওয়ায় জমিটির দেখাভালের দায়িত্বে থাকা কেয়ারটেকার কিরণকে বেধড়ক মারধর করে নীলাফুলা জখম করেন এবং তাহার কাছে থাকা নির্মান শ্রমিকদের বেতন বাবদ নগদ বিশ হাজার টাকা সহ প্রায় ৭ লাখ টাকা মুল্যের নির্মাণ কাজে ব্যাবহৃত রড সিমেন্ট পিকাপ ভ্যানে করে নিয়ে যায়। এতে আশুলিয়া থানায় হাজির হয়ে একটি মামলা দায়ের করেন সেলিম ভুঁইয়া ।

মামলা করাই উক্ত আসামীরা ক্ষিপ্ত হয়ে আবারও ২২/০৮/২৩ ইং তারিখে বিকালের দিকে বাদীর বায়না সূত্রে ক্রয়কৃত জমিতে এসে ৭০ লাখ টাকা চাঁদা দাবী করে এবং বাদীর কাছে থাকা দেড় লাখ টাকা ও লেবার মিস্ত্রিদের মারধর করে ২ লাখ টাকার রড সিমেন্ট নিয়ে যায়। তার-ই ধারাবাহিকতায় গত ২২/০৮/২৩ ইং তারিখে হাজী মঞ্জুরুল ইসলাম মন্ডল বাদী হয়ে আশুলিয়া থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন। আর উক্ত অভিযোগের ভিত্তিতে ২২ তারিখ মধ্য রাত্রে ১ নং বিবাদী ইব্রাহিম ও রাত্র ১১ টায় ৩ নং বিবাদী জহিরুল ইসলাম কে গ্রেফতার করেন এস আই এমদাদ ও শেখ ফরিদ।
গ্রেফতারের পরপরই এলাকায় মানুষের মাঝে চাঞ্চল্য এবং ক্ষোভের সৃষ্টি হয় প্রশ্ন উঠে পুলিশ কিভাবে কোন অভিযোগ এবং মামলা ছাড়া মানুষকে হয়রানি সহ হাতকড়া পরিয়ে গ্রেফতার করতে পারে। সচেতন মহলের প্রশ্ন বাংলাদেশে আইন বলতে কি কিছু আছে ?

সরেজমিনে ভুক্তভোগীদের অভিযোগ সূত্রে অনুসন্ধানকালে উঠে আসে ভিন্ন চিত্র। বিশ্বস্ত সূত্রে জানা যায়, বাদী মঞ্জুরুল ইসলাম মন্ডল মামলার পূর্বে থানায় কোন লিখিত অভিযোগ দায়ের করেননি। যার সত্যতাও ইতিমধ্যে পাওয়া গেছে।

সরেজমিনে অনুসন্ধানের একপর্যায়ে কথা হয় ইয়ারপুর ইউনিয়ন ৫ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য (মেম্বার) মোঃ জাহাঙ্গীর আলমের সাথে। তিনি বলেন, ঘটনার দিন রাতে আমাকে আশুলিয়া থানার এস আই এমদাদ ও শেখ ফরিদ মোবাইল ফোনে ডেকে নিয়ে আবু বকর নামে এক আসামী হাতকড়া নিয়ে পালিয়েছে বলে অবগত করেন এবং হাত কড়াটি উদ্ধার করতে আমার সহযোগিতা চান তারা, জাহাঙ্গীর মেম্বার আরো জানান, পুলিশের অনুরোধে আমি ঘটনার দিন রাতে বহু চেষ্টার পর হাতকড়া উদ্ধার করে এস আই এমদাদ ও শেখ ফরিদের নিকট হস্তান্তর করি। ইউপি সদস্য জাহাঙ্গীর আলম ঘটনার বিবরণ দিতে গিয়ে বলেন ২২ সে আগষ্ট রাত ১০ টার দিকে আশুলিয়া থানা পুলিশের এস আই এমদাদ ও শেখ ফরিদ ভাই আমাকে কল দেয়। কল দিয়ে বলে আপনার বাড়ির পাশে আবু বক্কর নামে এক আসামিকে গ্রেফতারের সময় হাতে হাতকড়া পরিহিত অবস্থায় দৌঁড়ে পালিয়ে গেছে। আপনি একটু হাতকড়াটা উদ্ধার করে দেন যেভাবে পারেন আসামি লাগবে না হাতকড়া টা উদ্ধার করলেই হবে।

পরে আমি তারাহুরো করে ঘটনা স্থলে গিয়ে সমস্ত ঘটনা শোনার পর আবু বক্করের সাথে মোবাইলে কথা বলে তাদের পরিবারের লোকজনের মাধ্যমে হাতকড়াটা পাঠিয়ে দিতে বলি। কথা বলার কিছুক্ষন পর আবু বক্করের এক আত্নীয় আমাকে হাতকড়া টা দিয়ে যায়। তাৎক্ষণিক আমি এস আই এমদাদ ও শেখ ফরিদ ভাইকে কল করে আসতে বলি এবং হাতকড়াটা তাদের হাতে বুঝিয়ে দেই। পরদিন সকালে জানতে পারি আবু বক্করের চাচাতো বোনের জামাই জহিরুল ইসলাম ও বক্করের ছোট ভাই ইব্রাহিমকে চালান করেছে। তারা নাকি আবু বক্করকে গ্রেফতারের সময় বাধা দিয়েছিল। তবে তাদের সাথে যেটা করা হচ্ছে সেটা আসলেই অন্যায়।

এরপর হাতকড়া নিয়ে পালানোর কারণ জানতে, মোবাইল ফোনে কথা হয় আবু বক্করের সাথে তিনি ঘটনার বিস্তারিত জানিয়ে বলেন, গোমাইল মৌজায় ১৩৮ শতাংশ যায়গা আমাদের পূর্ব-পুরুষদের সম্পত্তি, সিএস, আর এস, এস এ, সকল রেকর্ড আমাদের নামে এবং দলিল ও আছে। সেলিম ভুঁইয়া আর মন্জুর ইসলাম মন্ডল নাকি মমতাজ উদ্দীন ভুঁইয়া নামের এক ব্যাক্তির কাছে ওই জমির বায়না সূত্রে মালিকানা নিয়েছে। এবং আমাদের জমি অবৈধ ভাবে ক্রয় বিক্রয় করিতেছে।
আমরা কিছু বললেই আমাদেরকে পুলিশের সহযোগিতায় মিথ্যা মামলা সহ বিভিন্ন ভাবে হয়রানি করছে বলে অভিযোগ করেন আবু বকর।

সরেজমিনে অনুসন্ধানকালে ভোক্তভোগী আবুবকর জানান, গত ১৯-০৮-২৩ ইং তারিখে আমার পরিবারের ১৪ জন সদস্যের নামে চাঁদাবাজি ,চুরি, মারধর, প্রাণনাশের হুমকি সহ বিভিন্ন ধারায় এস আই শেখ ফরিদ’র সহযোগিতায় একটি মামলা দেন। সেই মামলায় আমি সহ আরও কয়েকজন গত ২১-০৮-২৩ ইং তারিখে ঢাকা হাইকোর্ট থেকে আগাম জামিন পাই এবং সেদিনেই জামিন নামার কপি আশুলিয়া থানায় জমা দিয়ে একটি রিসিভ কপি আমার কাছে রেখেছি।
তারপরও আশুলিয়া থানার এস আই শেখ ফরিদ ২২ তারিখ রাত আনুমানিক ৯ টার সময় সাদা পোশাকে দুইজন কনস্টেবলকে সাথে নিয়ে নামা গোমাইল আমার ফার্মেসীতে এসে আমাকে আটক করে।

সে সময় আশপাশের অনেক লোকজন ঘটনা স্থলে জড়ো হয়। পরে আমি আমার কাছে থাকা জামিনের কাগজটা (রিকল) এস আই শেখ ফরিদ কে দেখায়, তিনি আমার হাত থেকে নিয়ে কাগজটি টান দিয়ে ছিঁড়ে ফেলে বলেন, দূর তোর জামিনের গুষ্টি কিলাই বলে গালিগালাজ করতে থাকে এবং আমার শার্টের কলার ধরে টানাহেঁছড়া করে বলতে থাকে তোকে ওসি স্যার চা খাওয়ার জন্য নিয়ে যেতে বলেছে চল আমার সাথে এই কথা বলেই আমার হাতে হাতকড়া পড়ায়। এসময় সেখানে উপস্থিত আমার চাচাতো বোনের জামাই জহিরুল ইসলাম, জামিনে থাকা সত্তেও গ্রেফতার করার প্রতিবাদ করলে তাকেও তারা আটক করে।

এমতাবস্থায় আমি আতঙ্কিত হয়ে কোন উপায় না পেয়ে হাতকড়া সহ দৌঁড়ে পালিয়ে যাই, পরে শুনি আমাকে না পেয়ে আমার চাচাতো বোনের জামাই ও আমার ছোট ভাই ইব্রাহিমকে গ্রেফতার করে আশুলিয়া থানায় নিয়া গেছে। তার কিছুক্ষন পর আমাদের এলাকার মেম্বার জাহাঙ্গীর ভাই আমাকে ফোন দিয়ে বলে তোমার কোন সমস্যা হবে না তুমি হাতকড়াটা আমার কাছে দিয়ে যাও। তার কথা অনুযায়ী আমি হাতকড়াটা অন্য একজনের মাধ্যমে পাঠিয়ে দেই। তারপরদিন শুনি আমার দোকানের ক্যাশে রাখা ৫০ হাজার টাকাও নাকি নিয়ে গেছে পুলিশ এবং আমার ছোট ভাই, আমার বোনের জামাই ও আমাকে সহ মোট ১৬ জনের নামে মন্জুরুলকে বাদী করে ওই আগের ধারায় মামলা দিয়েছে এস আই এমদাদ ও শেখ ফরিদ।

পুলিশ কেন আপনাদের এমন হয়রানি করছে জানতে চাইলে আবু বক্কর আরো বলেন, পূর্বের মামলার সময় থানা থেকে আমাকে বলেছিল আমি সহ যদি আমার পরিবারের লোকজন ১৩৮ শতাংশ যায়গা থানায় গিয়ে না দাবি লিখে মুচলেকা দিয়ে আসি তাহলে আমাকে আর তারা মিথ্যা মামলায় হয়রানি করবে না। যদি না দেই তাহলে একটা না এমন হাজারটা মামলা খেতে হবে আমাকে। আমি তাদের প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায়, আমাদের বিরুদ্ধে আশুলিয়া থানার পুলিশ দিয়ে একটার পর একটা ষড়যন্ত্র মূলক মিথ্যা মামলা দিয়ে এমন হয়রানি করাচ্ছে বলে দাবী করেন ভোক্তভোগী আবু বকর ।

সরেজমিনে সেদিনের গ্রেফতারের ঘটনার বিষয়ে ঘটনাস্থলে প্রতক্ষ্যদর্শীদের কাছে জানতে চাইলে অনেকেই বলেন, হ্যাঁ সেদিন পুলিশের কাছে তিনি (আবু বক্কর) জামিন নামার কপি দিয়েছিলেন তারপরও পুলিশ তাকে গ্রেফতার করেন। অনেকেই বাধা দিয়েছে কিন্তু পুলিশ কারো কথা শুনেনি বরং সবার সামনে কাগজটা ছিঁড়ে ফেলেছে। এরপর বক্কর ভাই হাতকড়া সহ দৌঁড়ে পালিয়ে গেছে পরে রাতেই সেটা ফেরৎ দিছে। কিন্তু তার চাচাতো বোনের জামাই জহিরুলকে পুলিশ ধরে নিয়ে চাঁদাবাজীর মামলা দিয়েছে। উনিতো শশুড় বাড়িতে মেহমান হিসেবে আসছিলেন তারপর ও তার নামে মামলা দিয়েছে।

এবার মামলার সত্যতা খুঁজতে সংবাদকর্মীরা সরেজমিনে উপস্থিত হয় মারামারির ঘটনাস্থলে সেখানে গেলে বেড়িয়ে আসে এই মিথ্যা মামলার আরো চাঞ্চল্যকর তথ্য। ৩৮ ও ৫৩ নং মামলার এজাহারে উল্লেখিত যেসকল ঘরবাড়ি ভাংচুর ও নবনির্মিত দেয়াল ভাংচুরের কথা উল্লেখ করা হয়েছে তার বিন্দু মাত্র সত্যতা কিংবা কোন স্হাপনার বিন্দুমাত্র চিহ্ন পাওয়া যায়নি সেখানে । ১৩৮ শতাংশ জমির মধ্যে ঘর তো দূরের কথা দেয়ালের চিহ্ন মাত্র সরেজমিনে দেখা যায়নি, নেই কোন রড সিমেন্টের ছেঁড়া কিংবা খালি বস্তা পর্যন্ত। সেখানে পূর্বেও কোন ঘর বাড়ি ছিলোনা বলেও জানান আশেপাশের বসবাসকারী এলাকার স্থানীয় লোকজন। সরেজমিনে জনমনে প্রশ্ন কিসের ভিত্তিতে এজাহার ভুক্ত হলো এসব মিথ্যা মামলা গুলো।

ঘটনার সত্যতা যাচাইয়ে অনুসন্ধানকালে ঘটনার স্হলে দেখা মেলে ৩৮ নং মামলার এজাহারে উল্লেখিত মারধরের শিকার কেয়ারটেকার কিরণের। কথা হয় তার সাথে। গত ১৯ তারিখ এবং ২২ আগষ্ট-২০২৩ তারিখের ঘটনা ও তাকে মারধর বিষয়ে জানতে চাইলে কিরণ বলেন, কিসের মারামারি কিসের মারধর,কই আমাকে তো কেউ মারধর করেনি আর এখানে তো এমন কোন ঘটনাও ঘটেনি। যেখানে কোন ঘটনাই ঘটেনি সেখানে মারধর হবে কিভাবে। তাছাড়া আমি কেন কারো বিরুদ্ধে অযথা মিথ্যা অপবাদ কিংবা মামলা দিতে যাবো। এটাই সত্য আমাকে কেউ মারধর করেনি এবং এখানে কোন অপ্রীতিকর ঘটনাও ঘটেনি।

পুনরায় কেয়ারটেকার কিরণকে প্রশ্ন করা হলে আপনাকে মারধর করে, আপনার কাছে থাকা নগদ ২০ হাজার টাকা বিবাদীর নিয়ে গেছে মর্মে এজাহারে উল্লেখ করে মামলা করা হয়েছে এবিষয়ে কি জানেন কিনা জানতে চাইলে কেয়ারটেকার কিরণ আরও বলেন, মামলা হয়েছে এটা জানি কিন্তু সেখানে আমার নামে যেগুলো বলা হয়েছে এগুলো জানিনা। যখন মারধরের শিকার হওয়া ব্যাক্তি নিজেই জানেন না তাকে মারধর করা হয়েছে, তখন সবার কাছে পুরো বিষয় টি কাল্পনিক মনে হওয়াটাই স্বাভাবিক।

বিবাদীরা প্রথমে ৭ লাখ পরে ২ লাখ টাকা মুল্যের রড সিমেন্ট নিয়ে গেছে, তখন আপনি কোথায় ছিলেন কিরণের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি তো সব সময় এখানেই থাকি কিন্তু এখানে তো এখনো কোন কাজ ধরেনি আর রড সিমেন্টও আনেননি। কিরণের এমন স্পষ্ট বক্তব্য অনুযায়ী দায়ের করা মামলা দুটি ভিত্তিহীন অসত্য এবং উদ্দেশ্য প্রনোদিত ।

মামলার বাদী মঞ্জুরুল ইসলাম মন্ডলের কাছে মামলার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, পূর্বের মামলার সূত্র ধরে বিবাদীরা আমাকে মোবাইল ফোনে হুমকি দেয়। হুমকির বিষয়টি আমি ফোন করে আশুলিয়া থানা পুলিশকে জানাই এবং পরবর্তীতে ২২/০৮/২৩ ইং তাদের গ্রেফতার করে। তাই খবর পেয়ে থানায় এসে আজ মামলা দায়ের করলাম। মামলার সত্যতা কতটুকু জানতে চাইলে তিনি ব্যাস্ততা দেখিয়ে তার অফিসে যাওয়ার কথা বলে চলে যান। বাদী মঞ্জুরুল ইসলাম মন্ডলের এমন অস্পষ্ট বক্তব্যে যেন ছড়িয়ে আছে বহু রহস্যের গন্ধ, অনুসন্ধান চলমান আরো তথ্য বেড়িয়ে আসছে আরো বিস্তারিত আগামী সংখ্যায় ধারাবাহিক ভাবে প্রচার করা হবে।
তথ্য সূত্র – সাপ্তাহিক অপরাধ বিচিত্রা

Leave a Reply

Your email address will not be published.