কুমিল্লার সদর দক্ষিণে ইউপি এি-বার্ষিক সম্মেলনে হাইব্রীড প্রার্থীকে সভাপতি ঘোষণা সহ ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ

অপরাধ

এম শাহীন আলম :
গতকাল ১৬ অক্টোবর (রবিবার) কুমিল্লার সদর দক্ষিন উপজেলার গলিয়ারা (উওর) ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের এি-বার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়,উক্ত সম্মেলনকে কেন্দ্র করে ইউনিয়ন কমিটিতে তিনটি পদে বেশ কয়েক জন নেতা কর্মী পদপ্রার্থী হন, প্রার্থীদের মধ্যে সভাপতি পদে ৫ জন,সাধারণ সম্পাদক পদে ১ জন,সাংগঠনিক সম্পাদক পদে ৪ জন কে সাংগঠনিক প্রক্রিয়ায় প্রার্থী হিসেবে অনুমোদন দেন উপজেলা কমিটি,

সরেজমিনে জানা যায়,গতকাল সকালের দিকে সম্মেলন কার্যক্রম শুরু হয়,সম্মেলনে সভা সম্মতি ক্রমে ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের বিভিন্ন সাংগঠনিক পদে প্রার্থীদের ভোটাভোটির মাধ্যমে নির্বাচিত করা হবে বলে সিদ্ধান্ত নেন উপজেলা আওয়ামীলীগের নের্তৃবৃন্দ,সম্মেলন চলাকালীন সময়ে দুপুর ঘনিয়ে আসলে দুপুরের খাবার,জোহর নামাজের বিরতি দেওয়া হয়,

বিরতির পর সম্মেলন স্হলে সকল নেতা-কর্মী ভোটার সমর্থকরা পুনরায় মিলিত হন, অনুষ্ঠানটি খুব জাঁকজমকপূর্ণ চলছিল বলে জানা যায়,
তখনও ভোট দেওয়া ও গ্রহন করার প্রস্তুতি চলছিল,এরেই মধ্যে উপজেলা সভাপতি ও চেয়ারম্যান গোলাম সারোয়ার,উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল হাই বাবলু, সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রহিম, সাংগঠনিক সম্পাদক রুহুল আমিন চৌধুরী,উপজেলা সিনিয়র সহ-সভাপতি,স্হানীয় ইউপি মেম্বার আনাস,ইউপি মেম্বার মুজিবুর রহমানের যোগসাজশে হটাৎ নিয়মিত সদস্য সাধারণ ভোটারের ভোট গ্রহনের প্রথমে সুযোগ না দিয়ে উপস্থিত সকল নেতা কর্মীদেরকে হতাশ করে উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি গোলাম সারোয়ার একটি কাগজের তালিকা বের করে ওনার মনগড়া মতো কাউকে তোয়াক্কা না করে কো-অপ্ট সদস্যদের নাম ঘোষণা করে ভোট গ্রহণ চালিয়ে যান, কো-অপ্ট সদস্যদের ভোট গ্রহণ শেষে সাধারণ সদস্যদের ভোটের অনুমতি দেন গোলাম সারোয়ার,
স্হানীয় নেতা কর্মী সমর্থকদের অভিযোগ উপজেলা চেয়ারম্যান সাহেব, দলের সাংগঠনিক কোন ক্ষমতা বলে তিনি নিয়মিত সদস্য ভোটারদের ভোট গ্রহনের আগে ওনার মন গড়া মতো লোকদের মাইকে ডেকে এনে কো-অপ্ট সদস্যের নামে ভোট গ্রহনের অনুমতি দিল, সেই সাথে চেয়ারম্যান গোলাম সারোয়ারকে সমর্থ দিল সাধারণ সম্পাদক, সাংগঠনিক সম্পাদক স্হানীয় দুই ওয়ার্ড মেম্বার,
স্হানীয় নেতাকর্মী প্রার্থীদের অভিযোগ,উপজেলা চেয়ারম্যান ও আওয়ামীলীগ সভাপতি সম্মেলনে যা করেছে তিনি ওনার মনগড়া মতো করেছে,তাদের অভিযোগ ওনি সাধারণ ভোটারদের ওনার ইচ্ছা মতো আগে কো-অপ্ট ভোট গ্রহন করেছেন,তাতেও তিনি অনিয়ম করেছেন, যেখানে ডাঃ আবু তাহের (তারা মিয়ার) ও তার স্ত্রী নিলুফা আক্তার সাধারণ ভোটার সেখানে ডাঃ তারা মিয়াও কো-অপ্ট ভোট দেওয়ার সুযোগ পেয়েছেন ডাঃ তারা মিয়া তিনি নিজেই দুই ভোট এবং স্ত্রী কে ১ ভোট দিয়েছেন বলে অভিযোগ করেন, স্হানীয় বড়চর গ্রামের পান দোকানদার মমতাজ উদ্দিনকে কো-অপ্ট সদস্য হিসেবে ভোট দেওয়ার সুযোগ করে দিয়েছেন, এছাড়াও একেই পরিবারের দুই ভাই শাহাদাৎ হোসেন লিটন এবং মোতাহের হোসেন কে একজনকে সাধারণ ভোটার অন্য একজনকে কো-অপ্ট ভোটার বানিয়ে ভোট দেওয়ার সুযোগ করে দিয়েছেন গোলাম সারোয়ার,উপজেলা চেয়ারম্যান গোলাম সারোয়ারের এমন কর্মকান্ডে স্হানীয় আওয়ামীলীগ নেতা কর্মীরা আফসোস ও চরম ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, জীবনে বহু ঘটনা দেখেছি নিজের দলের মধ্যে নিজেদের নেতা কর্মীদের প্রকাশ্যে অনিয়ম মেনে নেওয়ার মতো নয়,কনেশতলার চৌধুরী বাড়ীর কয়েকজন আওয়ামীলীগ সমর্থিত লোকজন জানান,এই কনেশতলার আব্দুর রহমান চৌধুরী স্বাধীনতার পর থেকে মনে প্রাণে আওয়ামীলীগের রাজনীতি করে গেছেন,অথচ আব্দুর রহমানের স্ত্রী কে সম্মেলনের কাউন্সিলর ভোটার হতে অনুমোদন দেওয়া হয়নি,
তারা ক্ষোভের সহিত বলেন, সামনে নির্বাচনে উপজেলা চেয়ারম্যান গোলাম সারোয়ার একাই তিনি নৌকা মার্কা পাশ করিয়ে আনবেন,ওনার আর নেতাকর্মী লাগবে না,তারা বলেন,তিনি অর্থমন্ত্রীর ভাই উপজেলা চেয়ারম্যান তাই তাকে সম্মান করে কেউ কিছু বলে না,তিনি যা বলেন,সবাই তা শুনে কেউ কেউ গ্রামের মানুষ বলে ভয়ে কিছু বলে না,তিনি যারা ত্যাগী আওয়ামীলীগার তাদের মূল্যায়ন করেন না,আগামী নির্বাচনে ওনার নেতা কর্মীদের প্রয়োজন পরে কিনা দেখা যাবে, চেয়ারম্যান গোলাম সারোয়ারকে নিয়ে তারা নানান কথা সমালোচনা করতে থাকেন,তারা মন্তব্য করেন এক সারোয়ার নাকি সদর দক্ষিণ আওয়ামীলীগটাকে শেষ করে ফেলতেছেন,

সরেজমিনে আরো জানা যায়, ভোট গ্রহণ শেষে উপজেলা চেয়ারম্যান গোলাম সারোয়ার ভোট গণনার জন্য ভোটের যে বাক্স ছিল সেই ভোট না গণে তিনি তার মতাদর্শী কয়েকজনকে দিয়ে তার আয়ত্বে ভোট বাক্সটি নিয়ে এসে তার মন মতো লোকদের দিয়ে ভোট গুলো গণনা করেন ,ভোট গণনার শেষে সম্মেলনে শুধু মাত্র হাইব্রীড প্রার্থী মোঃ নাছিম আহামেদকে সভাপতি ঘোষণা দেন, কে কত ভোট পেয়েছে একজন কর্মী জানতে চাইলে তিনি ওই কর্মীকে দমক দিয়ে থামিয়ে দেন,এবং অন্যান্য পদে যারা পাশ করেছেন তাদের নাম প্রকাশ করে তিনি সম্মেলন সমাপ্তি বলে সম্মেলন স্হল ত্যাগ করেন,
সরেজমিনে আওয়ামী সংগঠনের নেতা কর্মী সমর্থকদের সাথে কথা বললে তারা গণ-মাধ্যমকে জানান, এই রকম এি-বার্ষিক সম্মেলনে তারা উপজেলা চেয়ারম্যান গোলাম সারোয়ার এবং তার মতাদর্শীদের অনিয়মে তারা হতাশ, তারা জানান,গতকালের সম্মেলনের প্রতিটি পদক্ষেপ এর জন্য উপজেলা চেয়ারম্যান গোলাম সারোয়ার গংদের এক গুরামী,এক-আধিপত্য বিস্তার কে দায়ী করেছেন, গলিয়ারা উওর নেতাকর্মীদের প্রশ্ন উপজেলা চেয়ারম্যান হাইব্রীড নাছিমকে ওনার কোন স্বার্থে সভাপতি বানাতে এতো মরিয়া?,নাছিমকে সভাপতি হিসেবে আমরা মানি না,মানবো না, তাদের প্রশ্ন ভোটারদের ভোট কে কত পেয়েছে তা উপজেলা চেয়ারম্যান সারোয়ার ভাই তাৎক্ষণিক কেন প্রকাশ না করে অন্য দল থেকে আসা একজন লোককে মনগড়া মতো ঘোষণা দিয়ে ইউনিয়ন আওয়ামীলীগ নেতা কর্মীদের ঘাড়ে চাঁপিয়ে দিন, নাছিম এর নের্তৃত্ব কেউ মানবে না বলে জানান,

গলিয়ারা (উওর) এর আওয়ামীলীগ নেতা কর্মীদের সাথে সরেজমিনে কথা বলে জানা যায়,যারা দীর্ঘ দিন আওয়ামীলীগের রাজনীতির সাথে জড়িত দলের ত্যাগী কর্মীদের বাদ দিয়ে অতীতে যিনি বিএনপির রাজনীতির সাথে জড়িত তাকে উপজেলা চেয়ারম্যান সভাপতি হিসেবে ঘোষণা দিয়েছেন, যা পুরো ইউনিয়ন আওয়ামী অঙ্গ- সংগঠনের নেতা কর্মীরা হতাশ,ইউনিয়নের বেশিরভাগ নেতা কর্মী হাইব্রীড নাছিমকে সভাপতি হিসেবে মানতে নারাজ,তারা দ্রুত পুনরায় ভোটাভোটির মাধ্যমে ত্যাগী নেতাদের ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি নির্বাচিত করার জোর দাবী জানান,

নেতা কর্মী সমর্থকদের অভিযোগের ভিত্তিতে সদর দক্ষিণ উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি গোলাম সারোয়ারের সাথে মোবাইল ফোনে কল করলে তিনি জানান,তিনি যা করছেন,বুঝে শোনে করেছেন, উপজেলা চেয়ারম্যান জানান,তিনি উপজেলার রাজনীতি করেন,কখন কোথায় কি করতে হবে তিনি সেই ভাবে সিদ্ধান্ত নেন বলে জানান,তিনি আরো বলেন আপনি কোন এলাকার সাংবাদিক আমি এখানে রাজনীতি করি আমার এলাকার খবর আমিই ভালো জানি , তিনি আরো বলেন এই বিষয়ে তো আপনি ছাড়া অন্য কোন সাংবাদিক কিছু বলেনি,শুধু আপনিই সম্মেলনের বিষয়ে জানতে চাইলেন,
অনুসন্ধান চলছে পরবর্তীতে ধারাবাহিক ভাবে পরের সংখ্যায় প্রকাশ করা হবে,

 

 

Leave a Reply

Your email address will not be published.