বান্দরবানে রেস্তোরাঁয় মদ না পেয়ে কুমিল্লায় কর্মরত পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে হামলার অভিযোগ

অপরাধ

বিশেষ প্রতিনিধি :
বান্দরবানে রেস্তোরাঁয় মদ না পেয়ে কুমিল্লায় কর্মরত এক পুলিশ কর্মকর্তা (এএসপি) ও তার স্ত্রী’র বিরুদ্ধে রেস্তোরার মালিক সহ ৫ জনের ওপর হামলার অভিযোগ উঠেছে। এঘটনায় রেস্তোরাঁর মালিকের স্ত্রী ও শিশুসহ পাঁচজন আহত হয়। গত ১৬ এপ্রিল (মঙ্গলবার) রাতে বান্দরবান শহরের মধ্যমপাড়া এলাকার তোহজাহ রেস্তোরাঁয় এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় পরদিন বুধবার সকালে দুই পক্ষকে নিয়ে বসে সমাধানের চেষ্টা করা হয়।
অভিযুক্ত পুলিশ কর্মকর্তা কুমিল্লার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (এএসপি) মংনেথোয়াই মারমা। তিনি কুমিল্লা জেলা পুলিশের প্রশাসন ও অর্থ দফতরের দায়িত্বে নিয়োজিত রয়েছেন বলে জানা যায়।

এবিষয়ে বান্দরবানের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রায়হান কাজেমী জানান এই অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনাটি বুধবার পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যানের কক্ষে দুই পক্ষকে নিয়ে বসে সমাধান করা হয়েছে। তবে তাঁর এই দাবি অস্বীকার করেন রেস্তোরাঁর মালিকের ভাই জসাই। তিনি গণমাধ্যমকে বলেন পার্বত্য জেলা পরিষদে আধা ঘণ্টা বৈঠক হয়েছে। বৈঠকে তারা সমাধানের জন্য চাপ দিয়েছে। কিন্তু কোনো সমাধান হয়নি।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, গত মঙ্গলবার ছিল বর্ষবরণ উৎসব সাংগ্রাইয়ের দ্বিতীয় দিন। কুমিল্লার (এএসপি) মংনিথোয়াই তার স্ত্রী ও কয়েকজন সঙ্গীকে নিয়ে তোহজাহ রেস্তোরাঁয় ঢুকে ভাতের সঙ্গে মদ দিতে বলেন। রেস্তোরাঁর মালিক শোঁয়েসাই মং তাঁদের মদ দিতে অপারগতা প্রকাশ করেন। তাতে চটে যান এএসপি ও তার স্ত্রী।
এ সময় এএসপির স্ত্রী বলেন,আমি এএসপির বউ। মদ এখনই দিতে হবে। না হলে দোকান বন্ধ করে দিবো এই কথা বলার পর তারা হইচই শুরু করেন। এক পর্যায়ে তারা রেস্তোরাঁর মালিক ও তার স্ত্রীকে মারধর শুরু করেন। এ সময় রেস্তোরাঁর মালিকের স্ত্রীর কোলে থাকা বাচ্চা মাটিতে পড়ে গিয়ে আহত হয়। মারধর থামাতে গিয়ে বেশ কয়েকজন জখম হন। স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে বান্দরবান সদর হাসপাতালে ভর্তি করেন। পরে পুলিশ গিয়ে রেস্তোরাঁ বন্ধ করে দেয়।

এ ঘটনায় আহত ব্যক্তিরা হলেন রেস্তোরাঁর মালিক শোঁয়েসাই মং (৩২), তাঁর স্ত্রী উম্যাশৈ (২৫), তাঁদের দুই বছরের সন্তান উখ্যাই, ভাই খিংসাই মং (৩৬) ও মা পাইনুচিং (৬৫)।
বান্দরবান সদর হাসপাতালের চিকিৎসক দিদার বলেন,আহতদের শরীরে দাঁতের কামড়ের দাগ রয়েছে। তা ছাড়া হাত-মাথাসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। আমরা তাঁদের চিকিৎসা দিচ্ছি।
এ ব্যাপারে রেস্তোরাঁর মালিকের ভাই জসাই বলেন, মদ না দেওয়ার কারণে তারা আমাদের রেস্টুরেন্টে ভাঙচুরের পাশাপাশি মারধর করেছেন বলে জানান। এই অভিযোগ নিয়ে থানায় গেলে পুলিশ মীমাংসার জন্য পরামর্শ দেন।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত কুমিল্লায় কর্তব্যরত পুলিশ কর্মকর্তা (এএসপি) মংনিথোয়াই মার্মাকে একাধিকবার তার মোবাইল ফোনে কলে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও তার মোবাইল সংযোগ পাওয়া যায়নি।

এ বিষয়ে কুমিল্লার পুলিশ সুপার আব্দুল মান্নান সাথে ফোনে যোগাযোগ করলে তিনি জানান, এ বিষয়টি শুনেছি। আমরা খোঁজখবর নিচ্ছি। বিস্তারিত জেনে পরে বলতে পারবো।

Leave a Reply

Your email address will not be published.