কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে বিয়ের আসরে বর না আসায় ক্ষোভ,অত:পর থানায় অভিযোগ

অপরাধ

বিশেষ প্রতিবেদক :

কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে বিয়ের সব আয়োজন হলেও বর না আসায় মেহেদী হাতে বধু হতে পারেনি এক তরুণী। উপজেলার ঘোলপাশা ইউনিয়নের কোমাল্লা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। এতে ছেলের পক্ষকে ধিক্কার জানাচ্ছেন সকলেই। এ ঘটনায় তরুণীর মা জিন্নতের নেছা বাদি হয়ে শনিবার বিকেলে শুভপুর ইউনিয়নের কাছিয়াপুস্করণী গ্রামের বর আলী আহাম্মদ, তার পিতা আইয়ুব আলী, বোন নাসরিন আক্তার ও মাতা ছালেহা বেগমের বিরুদ্ধে থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন।
স্থানীয় সূত্র ও থানায় দায়েরকৃত অভিযোগে জানা গেছে, কয়েকদিন আগে ঘটক সেলিম মিয়ার মাধ্যমে শুভপুর ইউনিয়নের কাছিয়াপুস্করণী গ্রামের আইয়ুব আলী ও ছালেহা বেগম তাদের ছেলে আলী আহাম্মদের জন্য ঘোলপাশা ইউনিয়নের কোমাল্লা গ্রামের মৃত আমির হোসেন ভুঁইয়ার মেয়ে নাজমা আক্তারের বিয়ের প্রস্তাব দেয়। উভয় পক্ষের আত্মীয় স্বজনের মাধ্যমে বুধবার সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টায় বিয়ের দিন-সময় ধার্য করা হয়। পরদিন বৃহস্পতিবার রাত আটটটায় আলী আহাম্মদ বর সেজে কোমল্লায় নাজমার বাড়িতে এসে খাওয়া শেষে নাজমাকে বধু সেজে তার বাড়িতে নিয়ে যাওয়ার কথা ছিল। উভয়পক্ষের সিদ্ধান্ত মোতাবেক বিয়েতে মোহরানা সাড়ে তিন লাখ টাকা ও দেড় লাখ টাকা মূল্যের স্বর্ণালঙ্কারও ধার্য করা হয়। বিয়ে উপলক্ষে বৃহস্পতিবার রাতে সব আয়োজন শেষ করে নাজমার পরিবারের লোকজন। গ্রামের দাওয়াতী মেহমান খাওয়া শেষে বরের লোকজনের জন্য অপেক্ষা করছে সবাই। কিন্তু দীর্ঘক্ষণ পরেও তারা আসছে না। মেয়ের পরিবারের পক্ষ থেকে ঘটক, ছেলে ও তার পরিবারের লোকজনের কাছে কল করলে তারা আসবে বলে জানিয়ে দেয়। কিন্তু ওই সময় মেহেদী হাতে নববধু সাজে ছিলেন নাজমা আক্তার। দীর্ঘ সময় পার হলেও বর না আসায় মেহেদী হাতে নাজমা আক্তার অজ্ঞান হয়ে যায়। তাকে স্থানীয় হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়। তখন মেয়ের আত্মীয় স্বজনের মাঝে হতাশার চাপ শুরু হয়। ঘটনাটি জানাজানি হওয়ায় এলাকায় নিন্দার ঝড় উঠে। এমন ঘটনায় নাজমার পরিবারের নগদ তিন লাখ টাকা ও মান-সম্মানের ক্ষতি হয়েছে বলে দাবি করেছেন তাঁর মা জিন্নতের নেছা। স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ বিষয়টি সামাজিকভাবে আপোষ-মিমাংশা করে দিবে বলে আশ্বস্ত করলেও আলী আহাম্মদ ও তার পরিবারের লোকজন সবার সাথে অসামাজিক এবং উশৃঙ্খল আচরণ করছে।
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত আলী আহাম্মদের পাশের বাড়ির একজন বলেন, ‘খোঁজখবর ও দেখাশোনার মাধ্যমে পাত্র-পাত্রীকে দেখে বিয়ে ঠিক হয়েছিল। অনুষ্ঠানের সময় বর আলী আহাম্মদ না যাওয়া কোনভাবেই ঠিক হয়নি। এটা মারাত্মক অপরাধ হয়েছে’।
অপরদিকে আলী আহাম্মদের বক্তব্য জানতে তার ব্যবহৃত মোবাইলে কল করলে সাংবাদিক পরিচয় জেনে সে মোবাইল বন্ধ করে দেয়।
এদিকে সচেতন মহল অভিযুক্ত ছেলে ও তার পরিবারের উপযুক্ত শাস্তি দাবি করে বলেছেন, তাদেরকে উপযুক্ত শাস্তি না দিলে এ সমস্যা ভবিষ্যতে আরও মহামারী আকার ধারন করবে। সুতরাং এখনই সঠিক পদক্ষেপ নিতে হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published.