করোনা আক্রান্তদের হোম কোয়ারেন্টাইনে নিয়ম মেনে চলতে নির্দেশনা দিয়ে গণবিজ্ঞপ্তি সরকারের

জাতীয়

অনলাইন নিউজ ডেস্ক :
মহামারি করোনাভাইরাস মোকাবিলায় এবার কঠোর হচ্ছে সরকার। এরই অংশ হিসেবে করোনা আক্রান্তদের হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকাসহ বেশকিছু নিয়ম মেনে চলতে নির্দেশনা দিয়ে সম্প্রতি গণবিজ্ঞপ্তিও জারি করা হয়েছে। নির্দেশনা অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে শাস্তি হিসেবে জরিমানাও করা করেছে সরকার। তবে, সরকারের এই উদ্যোগকে অপ্রতুল বলে অভিযোগ তুলেছে বিএনপি।

দলটির মতে, সরকার করোনা প্রতিরোধে সময়মতো উদ্যোগ নেই। আরও আগে উদ্যোগ নেওয়া দরকার ছিল।

এই পর্যন্ত দেশে ৮ জন  করোনার রোগী শনাক্তের তথ্য দিয়েছে সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান (আইইডিসিআর) আইইডিসিআর। প্রথম দিন তিন রোগী শনাক্তের পর গণবিজ্ঞপ্তি জারি করে।এতে বলা হয়, হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকা ব্যক্তিরা ১৪ (চৌদ্দ) দিন ঘরের বাইরে বের হতে পারবেন না। নিজের বাড়ির নির্ধারিত একটি কক্ষে থাকতে হবে তাদের। একইসঙ্গে পরিবারের অন্য সদস্যরা বিদেশফেরত সদস্যদের ‘হোম কোয়ারেন্টাইন’ নিশ্চিত করবেন।

এই প্রসঙ্গে গতকাল সোমবার ১৬ মার্চ সংবাদ সম্মেলনে আইআইডিসিআর পরিচালক অধ্যাপক মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোর বলেন, ‘কোয়ারেন্টাইরের নিয়ম না মানলে ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত জরিমানা করা হবে।’ তবে এর একদিন আগেই রোববার (১৫ মার্চ) কোয়ান্টাইন থেকে বের হয়ে যাওয়ায় মানিকগঞ্জে একজনকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করে প্রশাসন।

এদিকে ইউরোপের দেশগুলোয় আসা যাওয়া বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। ৩১ মার্চ পর্যন্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

তবে, সরকারে এই পদক্ষেপকে স্বাগত জানালেও কেউ কেউ বলছেন, উদ্যোগ নিতে দেরি হয়ে গেছে। তারা বলছেন, আরও আগে সরকারের কঠোর হওয়া উচিত ছিল। যদি আরও আগে আক্রান্ত দেশগুলো থেকে দেশে প্রবেশ বন্ধ করা যেতো, তাহলে ঝুকি অনেক কম হতো।

আইইডিসিআরের  তথ্য মতে, রোববার পর্যন্ত ৬ লাখ ৬ হাজার ১২ জন বিদেশ থেকে দেশে ফিরেছেন.

বিমান বন্দরের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. শাহরিয়ার সাজ্জাদ বলেন, আমরা যথেষ্ট আন্তরিকভাবে কাজ করছি। বিদেশ থেকে আসাদের প্রাথমিক স্বাস্থ্য পরীক্ষা বা তথ্য রাখার ব্যাপারে তাদের কোনো আন্তরিকতার অভাব ছিল না। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নির্দেশনা অনুযায়ী আক্রান্ত কয়েকটি দেশ থেকে আসাদের ব্যাপারে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। রানওয়েতে নামার পর তাদের প্রাথমিক স্বাস্থ্য পরীক্ষা করে, হজক্যাম্পে পাঠিয়েছি। এরপর সেখানে পরীক্ষা করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে স্বেচ্ছা কোয়ারেন্টাইনে পাঠানো হয়েছে।

এদিকে, সোমবার স্কুল বন্ধের ঘোষণার পর এখন সাধারণ অনেকে বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি অফিস বন্ধেরও তাগিদ দিয়েছেন।

করোনা প্রতিরোধে ব্যবস্থা নেওয়া প্রসঙ্গে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম আজাদ বলেন, আমরা একটি গণবিজ্ঞপ্তি প্রচার করেছি। এটি প্রয়োগের জন্য জেলা প্রশাসক, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, সিভিল সার্জন, স্বাস্থ্য পরিবার কল্যাণ কর্মকর্তা, ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানদের কাছে এটা পাঠিয়েছি।

করোনা মোকাবিলায় সরকারের পদক্ষেপকে “অপ্রতুল” আখ্যায়িত করেছেন বিএনপি’র সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী। সোমবার মতিঝিল এলাকায় করোনা প্রতিরোধে সচেতনতামূলক লিফলেট বিতরণের সময় তিনি বলেন, তারা শুধু লিপ-সার্ভিস দিচ্ছে। করোনার মতো মহামারি প্রতিরোধে সরকারের সে রকম উদ্যোগ দেখছেন না বলেও তিনি অভিযোগ করেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published.