ঔষধ বিক্রেতা বজলু এখন ডিগ্রীধারী ডাক্তার বনে

অপরাধ

মাহবুব আলম মানিক :
বাংলাদেশ মেডিকেল অ‌্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিলের (বিএমডিসি) অনুমোদন ছাড়া কেউ নামের আগে বা পরে ডাক্তার বা চিকিৎসা বিষয়ক উচ্চতর কোন ডিগ্রি ব্যবহার করতে পারবে না বলে নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট। অথচ মানাছে না কোন প্রকার নির্দেশনা !

শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত সুসজ্জিত চেম্বার,ল্যাব, দামি , আসবাব সবই আছে। নেই শুধু তাঁর অনুমোদিত ডিগ্রি। পড়াশোনার দৌড় সর্বোচ্চ মাধ্যমিক হলেও তাঁর নামের আগে ডাক্তার এবং নামের পরে নানা ‘ডিগ্রি’ লাগিয়েছেন বজলুর রহমান।

দিচ্ছেন ডেঙ্গু রোগের মত জটিল রোগের চিকিৎসা সহ নানান চিকিৎসা। রীতিমত নিজেই করছেন ডেঙ্গু টেস্ট, ব্লাড টেস্ট, পিটিসি টেস্ট , এক্সরে সহ বিভিন্ন পরিক্ষা নিরিক্ষা। লিখছেন প্রেসক্রিপসন ও এন্টিবায়োটিক যদিও তাঁর নেই উচ্চতর ডিগ্রির কোন চিকিৎসক সনদ নেই দক্ষতা কিংবা ডিপ্লোমা কোর্স তবুও হরহামেশাই দিয়ে যাচ্ছেন এমন ভুয়া চিকিৎসা সেবা।
এভাবেই লোকচক্ষুর আড়ালে প্রতিনিয়ত করে যাচ্ছেন মেডিকেল হল ও ভুয়া চিকিৎসার নামে রমরমা ব্যবসা।

তথ্য সুত্রে জানা যায় ভুয়া চিকিৎসক বজলুর রহমান আনুমানিক ৮-৯ বছর ধরে ঢাকা জেলার সাভার আশুলিয়া ও ঢাকা নতুন ইপিজেড জোনের পার্শ্ববর্তী এলাকা বুড়ির বাজার নতুনপাড়া টাইগার কলোনিতে ছোট খাটো একটি ফার্মেসী দিয়ে ঔষধ বিক্রি করতেন। এখন তিনি রাতারাতি আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ। বনে গেছেন ডিগ্রিধারী ডাক্তার ও মেডিকেল হলের মালিক একই স্থানে তৈরি করেছেন মেডিকেল হল সেই মেডিকেলের নাম দিয়েছন বর্ষা মেডিকেল হল যার কোন অনুমোদন দেননি সাভার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স তবুও ব্যানারে রেজিষ্ট্রেশন নম্বর লিখে রেখেছেন তিনি যা অবৈধ এবং সাভার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের তথ্যমতে ভুয়া রেজিষ্ট্রেশন নম্বর ।

বজলুর রহমান নিজস্ব মেডিকেল হল খুলে ডিগ্রিধারী ডাক্তার সেজে ভুয়া চিকিৎসা দেওয়ার পাশাপাশি ডিএমসি (এম আর)গর্ভপাত ও অস্ত্রপাচার করেন বলেন অভিযোগ রয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে। এবং কি নিজের এমন অপচিকিৎসা বাণিজ্য টিকিয়ে রাখতে চিকিৎসকের পাশাপাশি নিজেকে৷ কোন এক অনলাইন প্রোটালের সাংবাদিক হিসেবেও পরিচয় দিয়ে থাকেন তিনি।

এবিষয়ে কথিত নামধারী চিকিৎসক বজলুর রহমানের সাথে কথা বললে তিনি তাঁর এমন অপচিকিৎসা ও অপকর্মের সত্যতা শিকার করে সংবাদকর্মীদের কাছে ক্ষমা চান আর কখনো এসব করবেন না বলেও জানান বজলুর রহমান। তিনি আরও বলেন সাভার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে তাঁর নিয়মিত যাতায়াত রয়েছে। সখ্যতা রয়েছে উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা কর্মচারীদের সাথেও তবে কি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের যোগসাজসেই তিনি এমন অপকর্ম চালিয়ে যাচ্ছেন দিনের পর দিন প্রশ্ন উঠেছে জনমনে।

এদিকে এলাকার সচেতন মহল ও বিশেষজ্ঞরা বলছেন এরকম ভুয়া চিকিৎসকদের হাতে একাধিক রোগীর মৃত্যু পযন্ত হয়েছে।
ভুয়া চিকিৎসকদের তৎপরতায় ঝুঁকিতে রয়েছে দেশের চিকিৎসা খাত। সরকারি সতর্কবার্তার পরেও অবাধে চলছে ভুয়া ডিগ্রিধারী চিকিৎসকদের এমন অসাধু ব্যবসা। এমন চিকিৎসকদের বিরুদ্ধে দেশে আইনি কার্যকর ও নিয়মিত অভিযান নেই বলেলেই চলে।

বিশেষ করে সাভার আশুলিয়ায় বেঙের ছাতার মত গড়ে উঠেছে এসব রেজিষ্ট্রেশন বিহীন মেডিকেল সেন্টার ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার সহ ভুয়া চিকিৎসকের আতুরখানা। চোখে পরছেনা তেমন কোন প্রশাসনিক হস্তক্ষেপ কেউ কেউ আবার অভিযোগ করে বলছেন বিভিন্ন মাধ্যম এবং মাসোহারার দিয়ে দিনের পর দিন ভুয়া ডাক্তার দিয়ে চালাচ্ছে এসব মেডিকেল সেন্টার ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার এযেন মগের মুল্লুক পেয়ে বসেছেন তাঁরা ।

উক্ত বিষয়ে সাভার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্মকর্তা ডাঃ সাইমুল হুদার সাথে কথা বললে তিনি সাভার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মহদয়ের সাথে কথা বলে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেন । তবে দীর্ঘ সময় পার হলেও তিনি কোন ব্যবস্থা নেননি বলে জানা যায়।

অন্যদিকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্মকর্তা ডাঃ সাইমুল হুদা বর্ষা মেডিকেল হল ও ভুয়া চিকিৎসক বজলুর রহমানের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া ক্ষেত্রে সকল তথ্য প্রমাণাদি সাভার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের (ইন্সপেক্টর ) উপ-পরিদর্শক মোজাম্মেল হকের কাছে হস্তান্তর করার কথা বললে মোজাম্মেল হক বিভিন্ন ভাবে এরিয়ে যান বিষয়টি। এবং তথ্য প্রমাণাদি না নেওয়ার নানা অযুহাত আর তালবাহানায় সটকে পরেন তিনি।সেদিনের পর থেকে একাধিকবার ফোন করলেও আর কোন ফোন রিসিভ করেননি মোজাম্মেল হক।

Leave a Reply

Your email address will not be published.