যশোরের মণিরামপুর পৌরসভা কার্যক্রমে গতিশীলতা এনেছেন প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা হরেকৃষ্ণ অধিকারী

অন্যান্য

এইচ এম বাবুল আক্তার :
দেশের প্রথম শ্রেণির পৌরসভাগুলোতে প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) হিসেবে প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তাদের নিয়োগ দিয়েছে সরকার। এরই ধারাবাহিকতায় মণিরামপুর পৌরসভায় সিইও হিসেবে গত ৫-ই ডিসেম্বর,২০২১ তারিখে দায়িত্বে এসেছেন। অত্র উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) জনাব হরেকৃষ্ণ অধিকারী।ঢিলে ঢালাভাবে চলতে থাকা পৌরসভার প্রশাসনিক ও দাপ্তরিক কার্যক্রম।যোগদানের পর হঠাৎ করে গতিশীলতা এসেছে কার্যক্রমে । একটা সময় জন্ম-মৃত্যু সনদ সেবায় একেবারে পিছিয়ে ছিল মনিরামপুর পৌরসভা। জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের বেঁধে দেওয়া লক্ষমাত্রা কখনো অর্জন করতে পারেনি এ পৌরসভা। তবে তারই প্রচেষ্ঠায় প্রথমবারের মত এ সেবায় জেলার সব ইউনিয়ন ও পৌরসভার মধ্যে মনিরামপুর পৌরসভা প্রথম হয়েছে। এবং সারাদেশে এ বিষয়ে সেরা দশে স্থান করেছে যা এ পৌরসভার জন্য এক বিরাট অর্জন। জন্ম-মৃত্যু তথ্য সংগ্রহে পূর্বের থেকে বর্তমান নিবন্ধনের হার বৃদ্ধি পেয়েছে। এ বিষয়ে উপজেলা পরিষদের এক মিটিংয়ে পৌর মেয়র বলেন,আগে এ বিষয়ক ডিসি অফিসের মিটিংগুলোতে গেলে, লজ্জায় থাকতাম,কখন যে আমার পৌরসভার জন্ম-মৃত্যু নিবন্ধন নিয়ে আলোচনা হয়।তবে সিইও সাহেবের ঐকান্তিক চেষ্টায় সে ক্ষেত্রে ব্যাপক সাফল্য এসেছে। পূর্বে পৌরসভায় গেলে, কিছু স্টাফের উপস্থিতি সবসময় চোখে পড়তো,অন্যান্য অনেক কর্মচারী নিয়মিত অফিস করতো না।তবে সে ক্ষেত্রে বর্তমানে পরিবর্তন এসেছে।প্রধান নির্বাহী কর্তৃক এমন কিছু কর্মচারীর বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ায়,নিয়মিত উপস্থিতির বিষয়টি নিশ্চিত হয়েছে।এ ছাড়া কর্মচারীদের মাঝে দাপ্তরিক বিভিন্ন দায়িত্ব বন্ঠনের ফলে সেবা দানের বিষয়টি নিশ্চিত হয়েছে এবং এর ফলে পৌরসভায় সেবা প্রার্থীদের সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। খোঁজ নিয়ে জানা যায়,বিগত কয়েক বছর পৌরসভার হাট-বাজার ইজারার টাকার বড় একটা অংশ অনাদায়ী থেকে গেছে।তবে বর্তমান অর্থবছরে শতভাগ ইজারার টাকা ইতোমধ্যে আদায় হয়েছে। পৌরসভার বাজার ব্যবস্থাপনায়ও পরিবর্তন এসেছে।পৌর মার্কেটটির ভিতর দিয়ে যাওয়া রাস্তার একটা অংশ দীর্ঘদিন পার্শবর্তী দোকানীরা দখল করে রেখেছিলো।এর ফলে বাজারের রাস্তা সংকুচিত হয়ে পড়ায় যানজট তথা জনদূর্ভোগ বেড়ে গেছিলো।প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার নিয়মিত কিছু অভিযান ও মোবাইল কোর্টের ফলে,রাস্তার দু-ধারের যায়গা দখল মুক্ত হয়েছে।এর ফলে বাজারের জনদূর্ভোগ কিছুটা হলেও লাঘব হয়েছে। এছাড়া বর্তমান বছরে মশক নিধন অভিযান ও করোনা প্রতিরোধে জনসচেতনতা মূলক কার্যক্রমে পৌরসভার অংশগ্রহন ছিলো চোখে পড়ার মত। পৌরসভার কাউন্সিলর ও কর্মচারীদের সাথে কথা বলে জানা যায়,সিইও নিয়োগের পর প্রশাসনিক দিক দিয়ে পৌরসভা একটা শক্ত অবস্থানে এসেছে।স্থানীয় জনপ্রতিনিধি হওয়ায় অনেক ক্ষেত্রে মেয়র বা কাউন্সিলরের পক্ষে বিভিন্ন বিষয়ে স্থানীয়দের সাথে শক্ত অবস্থানে যাওয়া সম্ভব হয় না।তবে সিইও আসার পর সে সব বিষয়ে পৌরসভা শক্ত অবস্থানে থাকতে পেরেছে।যেমন অবৈধ দখলদার উচ্ছেদ,হাট-বাজার ইজারার টাকা আদায়,দাপ্তরিক কাজ বুঝে নেওয়া,রাজস্ব আদায়,অসাধু ব্যবসায়ীকে আইনের আওতায় আনা ও পৌরসভার কর্মচারীদের নিয়মের মধ্যে আনায়নে পৌরসভা বর্তমানে কঠোর অবস্থানে আসতে পেরেছে। ২নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর সুমন দাস বলেন,সিইও ও মেয়র মহোদয়ের সম্মীলিত প্রচেষ্টায় বর্তমানে পৌরসভা অতিতের যে কোন সময়ের চেয়ে ভাল অবস্থানে আছে।সিইও মহোদয়ের নেওয়া নানাবিধ পরিকল্পনার ফলে পৌরসভার কার্যক্রমে শৃঙ্খলা এসেছে।এ বছর সুষ্ঠুভাবে ভিজিএফ ও ভিজিডি বিতরন করা গেছে। পৌরসভায় সেবা নিতে আসা কয়েকজনের সাথে আলাপ-চারিতায় পৌরসভায় সিইও নিয়োগের বিষয়ে ইতিবাচক মনোভাব জানা যায়।পৌরসভায় সেবা নিতে আশা আব্দুল গনি মিয়া ও সালেহা বেগম বলেন,পৌরসভার কাজে গতিশীলতা এসেছে। পৌরসভার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা নিয়োগ দেওয়ার পর থেকে আমাদের মত গরীব মানুষের আর হয়রানির শিকার হতে হয় না, যখন যে কাজ করাতে আসি সহজে পেয়ে যায়। সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও মনিরামপুর পৌরসভার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) হরেকৃষ্ণ অধিকারী বলেন, পৌরসভায় যোগদানের পর পৌরসভার কাজে মনোনিবেশ করি।পৌরসভার মেয়র মহোদয় ভাল একজন মানুষ।আমরা সম্মীলিত ভাবে পৌরসভাকে এগিয়ে নেওয়ার জন্য যা যা করা দরকার, সে চেষ্টা অব্যাহত রাখবো। সর্বোপরি সাধারণ মানুষ পৌরসভাতে সিইও নিয়োগের বিষয়টিকে স্বাগত জানিয়েছে এবং একই সাথে সরকারের এ উদ্যোগকে প্রশংসা করেছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published.