মিয়ামির ধ্বংসস্তূপ থেকে শিশুকন্যার মরদেহ টেনে তুললেন দমকলকর্মী বাবা

আন্তর্জাতিক

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : 
যুক্তরাষ্ট্রের মিয়ামিতে ধসে পড়া ভবনের ধ্বংসস্তূপ থেকে এক দমকলকর্মীর ৭ বছরের মেয়ের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। মেয়েটির বাবা গত নয় দিন ধরে ওই ধ্বংসস্তূপেই উদ্ধার অভিযান চালাচ্ছিলেন। মেয়েটিকে যখন ধ্বংসস্তূপ থেকে টেনে তোলা হয় তখন তার বাবা সেই দমকলকর্মীও সেখানে ছিলেন।

সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে শনিবার বিবিসির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

মিয়ামির ওই ১২ তলা ভবনের ধ্বংসস্তূপে এখনও ১২৬ জন নিখোঁজ রয়েছেন। ভয়াবহ এ দুর্ঘটনার নবম দিনে শুক্রবার আরও দুইজনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এ নিয়ে এখন পর্যন্ত ২২ জনের মরদেহ পাওয়া গেছে।

বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, মিয়ামির ভবনটি ধসে পড়ার নবম দিনেও উদ্ধার তৎপরতা চালানো হচ্ছে। দিন যতই যাচ্ছে ধ্বংসস্তুপের মধ্যে উদ্ধার তৎপরতা চালানো কঠিন হয়ে পড়ছে। তবে ওই অঞ্চলে হ্যারিকেন ঝড় ধেয়ে আসার পূর্বাভাস উদ্ধারকর্মীদের মধ্যে আরও বেশি শঙ্কার সৃষ্টি করছে।

স্থানীয় গণমাধ্যম সূত্রে জানা যায়, ৭ বছর বয়সী সেই মেয়েটির নাম স্টেলা ক্যাটটারোসি। আর এই ধ্বংসস্তূপ থেকে উদ্ধার করা তৃতীয় শিশু স্টেলা।

আরও জানা যায়, মেয়েটি তার মা, খালা এবং দাদা-দাদির সঙ্গে আর্জেন্টিনা থেকে বেড়াতে এসেছিলেন। ২৪ জুন ভবনটি ধসে যাওয়ার সময় তারা সেখানে ছিলেন।

মিয়ামির দমকল বাহিনীর ক্যাপ্টেন ক্যারল বলেন, যখন ধ্বংসস্তূপ থেকে মেয়ের মরদেহ উদ্ধার করা হচ্ছিল তখন আমরা আমাদের সহকর্মীকে সতর্ক করছিলাম যে এখানে প্রিয়জন থাকতে পারে। এটি খুব বেদনাদায়ক। উদ্ধার করা আরেকজনের পরিচয় নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

স্টেলার বাবা মেয়ের মৃতদেহ ঢাকতে নিজের জ্যাকেটটি ব্যবহার করেন। পরে মৃতদেহের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের একটি ছোট পতাকা রেখে ধ্বংসস্তূপ এলাকা থেকে বেরিয়ে যান।

এদিকে মিয়ামি কাউন্টির মেয়র ধসে পড়া ভবনের দক্ষিণের অবশিষ্ট কাঠামোটি ভেঙে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি আশঙ্কা করছেন এটি আবার উদ্ধারকর্মীদের ওপর পড়তে পারে।

গত বৃহস্পতিবার (২৪ জুন) মিয়ামির সাগর তীরবর্তী সার্ফসাইড এলাকায় চ্যামপ্লেইন টাওয়ার্স সাউথ নামের ১৫৬ ইউনিটের ১২ তলা অ্যাপার্টমেন্টের বড় একটি অংশ ধসে পড়ে। ঘটনার সময় ভবনটির অধিকাংশ বাসিন্দা ঘুমিয়ে ছিলেন।

তবে ঠিক কী কারণে ভবনটির একাংশ ধসে পড়ল তা এখনো পরিষ্কার নয়। তবে ২০১৮ সালে প্রকৌশলীদের একটি নিরীক্ষা প্রতিবেদনে ৪০ বছরের পুরনো ভবনটির আন্ডারগ্রাউন্ড পার্কিং গ্যারেজে কাঠামোগত ত্রুটির কথা উল্লেখ করা হয়েছিল।

Leave a Reply

Your email address will not be published.