বগুড়ায় ফুডপান্ডার ডেলিভারি বয় থেকে মোবাইল ছিনতাইকারীর হোতা

অপরাধ

রাকিব মাহমুদ ডাবলু :
বগুড়ায় ফুডপান্ডার কাস্টমার সেজে অভিনব কায়দায় মোবাইল ফোন ছিনতাই ও চুরি চক্রের তিন সদস্যকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এ সময় তাদের কাছ থেকে চোরাই মোবাইল এবং বিপুল পরিমাণ চোরাই মোবাইলের যন্ত্রাংশ উদ্ধার করা হয়৷ ‍
গ্রেফতারকৃতরা হলেন, নূর কবীর শাকিল (২৪), মোঃ স্বাধীন (২০) ও সাদী আব্বাস (২০)। রোববার ৩ মার্চ রাত সোয়া ১০ টার সময় শাহজাহানপুর উপজেলার আশেরকপুর ইউনিয়নের রাণীহাট বাজার থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারের সময় তাদের কাছে, ১ টি চোরাই মোবাইল, ২টি আইফোন এবং ১ টি লাল রঙের এ্যাপাসি পুরাতন মোটরসাইকেল উদ্ধার করা হয়৷ পরে গ্রেফতারকৃতদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে শহরের জামিলনগরের একটি ভাড়া বাসায় অভিযান চালায় পুলিশ। সেখান থেকে ফুড পান্ডার ডেলিভারি বয়ের একটি ব্যাগ, চোরাই ও ছিনতাইকরা ৩ টি আইফোন, ৩৩টি আইফোনের সামনে ও পেছনের অংশসহ আইফোনের ভিতরের বিভিন্ন ধরনের ৬০ টি যন্ত্রাংশ উদ্ধার করা হয়।গ্রেফতার হওয়া শাকিল বাসাটিতে ভাড়া থাকতেন। জেলার পুলিশ সুপার সুদীপ কুমার চক্রবর্ত্তী সোমবার দুপুরে নিজ কার্যালয়ে প্রেস ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য দিয়েছেন।পুলিশ সুপার জানান, গ্রেফতার তিন যুবক মোবাইল ফোন চোরাই চক্রের সক্রিয় সদস্য। তারা ফুডপান্ডার কাস্টমার সেজে অভিনব কায়দায় মোবাইল ফোন ছিনতাই করতো। এরপর সেই ফোনের যন্ত্রাংশ খুলে ঢাকা থেকে নিয়ে আসা আইফোনের চোরাই যন্ত্রাংশের সাথে সংযুক্ত করতো। এরপর সেই ফোনগুলো তারা অনলাইন মার্কেট প্লেসসহ বিভিন্ন জায়গায় সরাসরি বিক্রি করতো। গ্রেফতারের পর শাকিলের দেওয়া তথ্য মতে শহরের জামিলনগর এলাকায় তার ভাড়া বাসায় অভিযান চালানো হয়। পুলিশ সুপার আরও জানায়, গ্রেফতার শাকিল চক্রটির মূলহোতা। তিনি নিজেও প্রথমে ফুড পান্ডার ডেলিভারি বয় হিসেবে কাজ করতেন। কোন একটি চক্র ফুড পান্ডায় খাবার অর্ডার করে শাকিলের মুঠোফোন কেড়ে নেয়। এরপর তিনি নিজেই একটি চক্র গড়ে তোলেন। চক্রের সদস্যদের নিয়ে তিনি ফুড পান্ডাতে খাবার অর্ডার করতেন। ডেলিভারি ম্যান খাবার নিয়ে সেখানে আসলে তার মুঠোফোন অভিনব ভাবে কেড়ে নিতেন। এছাড়াও নানা ভাবে তারা চোরাই মোবাইল সংগ্রহ করে সেগুলোর যন্ত্রাংশ খুলে ফেলতেন। সেই যন্ত্রাংশগুলো আইফোনে কেসিং এ সংযুক্ত করে সেগুলো অনলাইনে বিক্রি করতেন। আইফোনের ভুয়া কেসিংগুলো তারা ঢাকার একটি চোরাই চক্রের কাছ থেকে সংগ্রহ করতেন। শাকিল মূলত ইউটিউবে ভিডিও দেখে ভুয়া আইফোন তৈরি ও মোবাইল ফোনের যন্ত্রাংশ খুলে ফেলতে পারদর্শী হয়ে উঠেন। এছাড়াও অনলাইনে মুঠোফোনগুলো বিক্রির জন্য শাকিল নিজের একটি ভুয়া জাতীয় পরিচয় পত্র ব্যবহার করতেন। পুলিশ সুপার সুদীপ কুমার চক্রবর্ত্তী বলেন, গ্রেফতার সবার বিরুদ্ধে প্রচলিত আইনে মামলা করা হয়েছে৷ এছাড়াও চক্রের বাকি সদস্যদের গ্রেফতারে অভিযান চলছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published.