বগুড়ায় তদবিরে ব্যর্থ হয়ে পুলিশের বিরুদ্ধে থ্রিহুইলার চালকদের উস্কে দিল যুবলীগ নেতা

অপরাধ

মতিন খন্দকার টিটু :
বগুড়া-নাটোর মহাসড়কে আটককৃত থ্রিহুইলার ছাড়ছেই না কুন্দারহাট হাইওয়ে পুলিশ। কাজে আসছে না নেতা ও প্রভাবশালীদের তদবির। হাইওয়ে থানা ঘেরাও এবং মহাসড়ক অবরোধ করেও সুফল পাননি তদবিরে ব্যর্থ ব্যক্তিরা। হাইওয়ে পুলিশের কঠোরতায় বিপাকে পড়েছেন থ্রিহুইলার চালকরা। কমিউনিটি পুলিশিং কমিটির নাম ব্যবহার করে অনেকেই তদবির করছেন বলে জনশ্রুতিতে অভিযোগ উঠেছে। ব্যাটারিচালিত সাধারণ অটোভ্যানের তদবিরে ২হাজার টাকা থেকে ১০হাজার টাকা পর্যন্ত বখরা নেয়া হচ্ছে। থ্রি-হুইলার আটকের সময় ঘটনাস্থলেই অসাধু পুলিশ সদস্যকে ম্যানেজ করে ফায়দা নিচ্ছে স্থানীয় যুবলীগ নেতা রাসেল জামানের নেতৃত্বে একটি সিন্ডিকেট। তিনি কুন্দারহাট হাইওয়ে কমিউনিটি পুলিশিং নেতা পরিচয়ে সহজেই বখরা আদায় করছেন বলে জনশ্রুতিতে অভিযোগ উঠেছে। যে টাকা দিতে পারছেনা, সেটাই পুলিশ ফাঁড়িতে নিয়ে ড্যাম্পিং করছে, থ্রিহুইলার চালকদের মুখে মুখে এমন অভিযোগ প্রকাশ পাচ্ছে।
তবে এমন অভিযোগ সঠিক নয় দাবি করে রবিবার সকালে কুন্দারহাট হাইওয়ে থানার (ইনচার্জ) জাহেদুল ইসলাম জাহিদ জানান, থ্রিহুইলার বিষয়ে কোনো আপস নেই। মহাসড়কে থ্রিহুইলার উঠবেনা, এটাই হাইওয়ে পুলিশের শেষ কথা। অনৈতিক কাজে কোনো পুলিশ সদস্য সম্পৃক্ত থাকলে হাইওয়ে এসপি স্যারের কাছে অভিযোগ জানাবেন, কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে। দালালরা আর্থিক ফায়দা লুটছে এমন কথা আমাদেরও কানে এসেছে, সুষ্পষ্ট প্রমাণ থাকলে আইনী ব্যবস্থা হবে। তিনি জানান, বর্তমানে পুলিশ ফাঁড়িতে প্রায় ৪শ ৫০টি থ্রিহুইলার আটক রয়েছে। কোনো তদবিরে ছাড়াছাড়ি হবেনা, মহাসড়কে থ্রিহুইলার উঠলেই আটক করা হবে।
জনশ্রতিতে জানা গেছে, সিএনজি ইজিবাইক ও অটোভ্যান সহ থ্রিহুইলার মহাসড়কে দেখলেই আটক করে নিয়ে যাচ্ছে হাইওয়ে পুলিশ। এই সুযোগে কুন্দারহাট বাজার কমিউনিটি পুলিশিং নেতা পরিচয়ে বখরা বাণিজ্যে তৎপর তদবির শুরু করেন যুবলীগ নেতা রাসেল জামান। কিন্তু তদবিরে কান দিচ্ছে না পুলিশ, তদবিরে ব্যর্থ হয়ে থ্রিহুইলার চালকদের উস্কে দেয়ায় বৃহস্পতিবার (২৩ জানুয়ারি) বিকাল ৪টায় মহাসড়কে অবস্থান নেন থ্রিহুলার চালকরা। তদবিরবাজ খ্যাত রাসেলের নেতৃত্বে কুন্দারহাট হাইওয়ে থানা ঘেরাও এবং মহাসড়কে গাছের গুড়ি ফেলে অবরোধ করে বিক্ষুব্ধরা। অবরোধের কারনে বগুড়া-নাটোর রুটে সব ধরনের যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। অভিযুক্ত রাসেলের নেতৃত্বে ছবি নিতে গেলে স্থানীয় সাংবাদিক সাখাওয়াত হোসেন হানিফের ওপর হামলা ও ক্যামেরা কেড়ে নেয়ার চেষ্টা করে। পরে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান রেজাউল আশরাফ জিন্নাহ ও হাইওয়ে পুলিশের কঠোর হস্তক্ষেপে ভেস্তে যায় অনৈতিক আন্দোলন। মহাসড়কে যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক হয়। সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে অভিযুক্ত রাসেল জামান নিজেকে উপজেলা কমিউনিটি পুলিশিং সভাপতি পরিচয়ে পরিচিত গড়ার অপচেষ্টা করেছে বলে অভিযোগ করে কমিউনিটি পুলিশিং নেতা সানোয়ার হোসেন মিলন বলেন, ফেসবুকে প্রচার দেখে প্রথমে আমরা বিব্রত হয়েছিলাম। আসলে রাসেল মুলত তদবিরবাজ। মন্তব্য নিতে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে অভিযুক্ত রাসেল জামান ফোন রিসিভ করেননি।
নন্দীগ্রাম থানার পুলিশ পরিদর্শক (ওসি) শওকত কবির বলেন, রাসেল নামের কেউ উপজেলা কমিউনিটি পুলিশিং কমিটির সভাপতি নন।

Leave a Reply

Your email address will not be published.