ফেনীতে প্রতিবন্ধী নারীকে ধর্ষণ : মমলা থেকে বাচঁতে বিয়ে করলেন আওয়ামী লীগ নেতা

অপরাধ

বিশেষ প্রতিনিধি :
ফেনীর ধলিয়ার অলিপুর গ্রামে প্রতিবন্ধী এক নারীকে (৩৫) বিয়ের প্রলোভনে ধর্ষণ করার অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. মাহবুব হোসেন (৬৩) বিরুদ্ধে। বিষয়টি জানাজানি হওয়ার পর মামলার আসামি হওয়া থেকে বাঁচতে সোমবার দেড় লাখ টাকা মোহরানায় ওই নারীকে বিয়ে করেছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি মাহবুব।

এদিকে প্রতিবন্ধীকে ধর্ষণের ঘটনায় ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. মাহবুব হোসেনকে মৌখিকভাবে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে বলে জানা গেছে।
স্থানীয়রা জানান, ফেনী সদর উপজেলার ধলিয়া ইউনিয়নের অলিপুর গ্রামে মাহবুবদের বাড়ির প্রতিবন্ধী নারীকে সরকারি অনুদানের সহায়তা দেয়ার সময় তার সাথে সখ্যতা গড়ে উঠে। তাকে প্রতিবন্ধী কার্ডসহ যাবতীয় সুযোগ-সুবিধা দিতেন মাহবুব। এ সুযোগে তার ঘরে গিয়ে একাধিকবার শারীরিক সম্পর্ক করছে। সর্বশেষ গত রোববার দুপুরে ওই নারীর সাথে শারীরিক সম্পর্ক করতে গেলে বাড়ির লোকজন দেখে ফেলে ও মাহবুব হোসেনকে আটক করে। বাড়ির লোকজন প্রতিবন্ধী নারীকে জিজ্ঞেস করলে সে দীর্ঘদিনের সম্পর্কের কথা খুলে বলে। পরবর্তীতে ঘটনাটি স্থানীয় চেয়ারম্যানকে জানান এলাকাবাসী।

স্থানীয়রা আরও জানান, ওই প্রতিবন্ধী মহিলা তার বাবার বাড়িতে থাকেন। মানুষের কাছ থেকে সহযোগিতা নিয়ে জীবন-যাপন করেন।
ধলিয়া ইউনিয়নের সমাজপতি আজিজুল হক জানান, বিষয়টি নিয়ে স্থানীয়রা মামলার চেষ্টা চালালে মামলার আসামি থেকে বাঁচতে দেড় লাখ টাকা মোহরানায় ওই নারীকে সোমবার বিয়ে করেছেন আওয়ামী লীগ নেতা মাহবুব। বিয়েতে দেড় লাখ টাকা দেনমোহর ধরা হলেও কাবিনের ৫০ হাজার টাকা উশুল দেয়া হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, ‘মাহবুবের প্রথম স্ত্রীর সম্মতিতে মাহবুবদের বাড়ির তৃতীয় পক্ষের একটি ঘরে বিয়ে হয়েছে। তবে আমি যতক্ষণ ছিলাম ততক্ষণে ওই নারীকে মাহবুবদের ঘরে নেয়া হয়নি।

মাহবুবের আগের ঘরে এক স্ত্রী ও ৩ ছেলে-মেয়ে রয়েছে।’
স্থানীয় ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক মেম্বার আবুল বশর সবুজ বলেন, ‘এখন যেহেতু বিয়ে হয়ে গেছে, এজন্য মামলা-মোকদ্দমা হচ্ছে না। আমরাও চাই তারা দু’জন সুখে থাকুক।’
ধলিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার আহম্মদ মুনশী বলেন, প্রতিবন্ধী নারী বিষয়টি নিয়ে আমার কাছে এসেছেন; আমি বিচার পাওয়ার জন্য সর্বাত্মক সহযোগিতা করেছি। তিনি আরও বলেন, সোমবার সকালে ফেনী সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শুসেন চন্দ্র শীল গ্রামে এসে মৌখিকভাবে মাহবুবকে আওয়ামী লীগ থেকে বহিষ্কার করেছেন। তদন্ত শেষে পরবর্তীতে বিষয়টি প্রমাণিত হলে তাকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হবে বলেও চেয়রাম্যান জানান।
ফেনী মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. আবদুর রহীম সরকার জানান, সদর উপজেলায় প্রতিবন্ধী কোন নারীকে ধর্ষণের বিষয়ে থানায় কোন লিখিত অভিযোগ পাওয়া যায়নি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published.