কুমিল্লা মহাসড়ক যেন ময়লার স্তুপঃ দূষিত হচ্ছে পরিবেশ-লুট হচ্ছে সরকারি গাছ

অন্যান্য

ফারুক আহাম্মেদ :
কুমিল্লা মহাসড়কের পাশের বিভিন্ন এলাকায় উৎকট পঁচা দুর্গন্ধে যেন দম বন্ধ হয়ে আসার উপক্রম ঘটে। সড়কের পাশ দিয়ে হেটে চলা শিক্ষার্থী ও পথচারীরা চলাফেরা করতে হয় নাকে মুখে কাপড় বেঁধে। উৎকট গন্ধে যাত্রীরা বাধ্য হয় অনেক সময় বমি করতে। সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, নিমসার, চান্দিনা বাস স্টেশন, দেবিদ্বার, নাজিরা বাজার সহ কুমিল্লার বিভিন্ন অংশের মহাসড়ক যেন খোলা আবর্জনার ভাগার। মরা পুশুপাখি হাসপাতালের বর্জ্য, কারখানা, হাট বাজার, পৌরসভা ও আবাসিক এলাকার সকল ময়লা গাড়ি দিয়ে এনে স্তুপ করে ফেলা হচ্ছে মহাসড়ক ও ফুটপাথের উপরেই। স্থানীয় সরকারি বেসরকারি হাসপাতালগুলোর শোধনাগার না থাকায় রুগীদের ব্যবহৃত বর্জ্যাও ফেলা হচ্ছে মহাসড়কে। এতে মারাত্মক হুমকির মুখে পরেছে আশেপাশের পরিবেশ ছড়াচ্ছে রোগ জীবাণু সহ বাড়ছে ডেঙ্গু মশার বিস্তার। কেবল পরিবেশ দূষণই হয় মাহাসড়কের পাশে জনবহুল খোলা যায়গায় এমন কি স্থানীয় কৃষকদের আপত্তি থাকা সত্ত্বেও জোর করে ফসলি জমির উপরে ফেলা হচ্ছে এসব বর্জ্য পদার্থ। এতে ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে কৃষকরা। তাছাড়া এসব ময়লার স্তুপ পরিস্কারের নামে অনেক সময় আগুন লাগিয়ে পুড়িয়ে ফেলা হয় লক্ষ লক্ষ টাকা মূল্যের সরকারি গাছ। রাতের আধারে এসব গাছ কৌশলে কেটে নিয়ে বিক্রি করেছে একটি চক্র। গতকাল শনিবার দাউদকান্দি থেকে পদুয়ার বাজার পর্যন্ত মহাসড়কের বিভিন্ন অংশ ঘুরে দেখা যায়, প্রায় সহস্রাধীক মূল্যবান গাছ অনুমতি ছাড়াই কটে নেয়া হয়েছে। রাতের আধাঁরে স্থানীয় প্রভাবশালীরা এসব গাছ প্রথমে উপড়ে ফেলে দিয়ে পরে তা টুকরো করে কেটে নেয়। মহাসড়কের পাশে ও ফুটপাতে এসব দুষিত বর্জ্য ও আবর্জনা থেকে রোগ বালাই তো ছড়াচ্ছেই সেই সাথে আশেপাশের পরিবেশের ওপর এর বিরুপ প্রভাবও পরছে। উন্মুক্ত স্থানে ফেলে দেয়া বিষাক্ত ঔষধ ও বিষ জাতীয় দ্রব্য খাওয়ার ফলে পরিবেশের ভারসম্য রক্ষাকারী জীবজন্তু ও পাখি মারা যাচ্ছে।
দেবিদ্বার বাগুর এলাকর স্থানীয় বাসিন্দা কুমিল্লা উত্তর জেলা ছাত্রলীগের পাঠচক্র বিষয়ক সম্পাদক যাদব রায় বলেন, একটি সভ্য দেশে এভাবে খোলা মেলা আবর্জনা ফেলা কোন ভাবেই কাম্য নয়। ঢাকা চট্টগ্রাম মহাসড়ক ব্যবহার করে দেশ বিদেশের ভিআইপি ও পর্যটকগণ চলাচল করেন। এশিয়ান হইওয়ের পাশে এমন পরিবেশ অবশ্যই দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করে। পৌরসভা গুলোতে আবর্জনা ফেলার নির্ধারিত স্থান নির্ধারণের পাশাপাশি বর্জ্য শোধনাগার স্থাপন করা খুবই জরুরী।
এবিষয়ে কুমিল্লা সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী আহাদ উল্লাহ বলেন, বিষয়টি নিয়ে এর আগে বহুবার বিভিন্ন পৌরসভা সহ সংশ্লিষ্টদের চিঠি দেয়া হয়েছে, মৌখিক ভাবেও বহুবার তাদের বলা হয়েছে। কিন্তা তারা কেউ বিষয়টি কানে তোলেন। যার ফলে সরকারের লক্ষ লক্ষ টাকার মূল্যবান গাছ নষ্ট হচ্ছে। শুধু গাছই নয় সড়কের সৌন্দর্য ও পরিবেশের ও ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে। রাষ্ট্রিয় সম্পদ রক্ষা করা জনগণ সহ সকলেরই দায়িত্ব। অবৈধভাবে সড়কের গাছ যারা কাটছে সুনির্দিষ্ট প্রমাণ পেলে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published.