কুমিল্লা তিতাসে সংঘবদ্ধ ডাকাত দলের কাছে অসহায় প্রশাসন : থামছে না সিরিজ ডাকাতি

অপরাধ

হালিম সৈকত, কুমিল্লা :
কুমিল্লার তিতাস উপজেলা যেন এক ডাকাতের অভয়ারণ্য। গত মাস দুয়েক যাবত একের পর এক চুরি আর ডাকাতির ঘটনা ঘটেই চলছে। অবস্থা দৃষ্টে মনে হচ্ছে এটি এক ভয়ংকর ডাকাত রাজ্য। পুলিশি পাহারা, তিতাস উপজেলা ছাত্রলীগের জোরালো পদক্ষেপও থামাতে পারছে না চোর, ডাকাতদের। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ সর্বত্র বইছে সমালোচনার ঝড়। কেন বন্ধ করা যাচ্ছে না ডাকাতি? ডাকাত দল এত সংঘবদ্ধ হলো কিভাবে? তাদের লাগাম টেনে ধরা যাচ্ছে না কেন? ধারাবাহিকভাবে চুরি ডাকাতি হচ্ছে অথচ একজন চোর-ডাকাতকেও কেন আটক করা যাচ্ছে না? এই ব্যর্থতা কার? সাধারণ মানুষের ভাষ্য, প্রশাসন সম্পূর্ণ ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে। প্রশাসনের সাথে সাথে রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ ও জনপ্রতিনিধিদের ভূমিকাও প্রশ্নবিদ্ধ। ডাকাতির সাথে সাথে ডাকাতদল আহত করছে নিরীহ মানুষকে।

শুধুই কি ডাকাতি? ডাকাতি করতে বাঁধা দেয়া কিংবা জিনিসপত্র নিতে বাঁধা দিলেই ঘটছে বিপত্তি। এখন পর্যন্ত তিতাস পুলিশ প্রশাসন কোন ঘটনার সুরাহা করতে পারেনি। কিংবা দিতে পারেনি সংঘবদ্ধ ডাকাত দলের কোন পরিচয়। তারা কি তিতাসেরই লোক নাকি অন্য কোন গ্রহের প্রশ্ন তিতাসবাসীর? কেন তাদের ধরা যাচ্ছে না?

বিভিন্ন তথ্য, উপাত্ত পর্যালোচনা করে দেখা গেছে গত ২৩ জানুয়ারি থেকে ৮ মার্চ ২০২১ খ্রি. পর্যন্ত তিতাসে চুরি ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে প্রায় ৪০টির অধিক।

এই বিষয়ে তিতাস উপজেলা আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ মহসিন ভূইয়া বলেন, তিতাসে আশঙ্কাজনকভাবে চুরি ডাকাতি বেড়ে গেছে বেশ কিছু দিন যাবত। এই বিষয়ে তিতাস থানা পুলিশকে আরো তৎপর হওয়ার জন্য বলা হয়েছে। বিশেষ করে আমাদের ছাত্রলীগ রাত জেগে পাহারা দিচ্ছে। তাদের ভূমিকা প্রশংসনীয়। আর বিশেষ করে আমি আমার প্রত্যকটি ওয়ার্ডে কমিটি করে দিয়েছি। তারা রাত জেগে পাহারা দিচ্ছে। আর আ’লীগের প্রতিটি নেতাকর্মীও সজাগ রয়েছে, তাদেরকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে তৎপর থাকার জন্য।

এই বিষয়ে তিতাস থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সৈয়দ মোহাম্মদ আহসানুল ইসলাম বলেন, চুরি ডাকাতি বন্ধে আমাদের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। প্রতিটি ইউনিয়নের ওয়ার্ড পর্যায়ে আমরা মেম্বারদের নেতৃত্বে ডাকাত প্রতিরোধ কমিটি করে পাহারার ব্যবস্থা করেছি। তাছাড়া পুলিশি টহল জোরদার করা হয়েছে। তথ্য দিয়ে পুলিশকে সহযোগিতা করার জন্য আমি সকলের প্রতি আহ্বান জানাই।
এই বিষয়ে তিতাস প্রেসক্লাবের সভাপতি ও সিনিয়র সাংবাদিক মোঃ জসিম উদ্দিন মোল্লা বলেন, রাজনৈতিক গডফাদারদের ছত্র ছায়ায় এসব ডাকাতি হচ্ছে বলে আমার ধারণা। তা না হলে এভাবে সিরিজ ডাকাতির কোন সুযোগ নেই। আমি মনে করি এমপি মহোদয় যেভাবে চাচ্ছেন তিতাস হোমনাকে এগিয়ে নিতে, সেই উন্নয়নকে বাঁধাগ্রস্ত করতেই একদল কুলাঙ্গার শান্ত তিতাসকে অশান্ত করার অপচেষ্টায় লিপ্ত রয়েছে।

এই বিষয়ে তিতাস উপজেলা শ্রমিকলীগের আহ্বায়ক গাজী মোঃ সোহেল রানা বলেন, আমার কাছে মনে হয় কোথাও একটি সমন্বয়হীনতার অভাব রয়েছে। জনসাধারণ ও প্রশাসনের মাঝে একটি সমন্বয় প্রয়োজন। আর তিতাস উপজেলার প্রতিটি নেতৃবৃন্দের উচিত সজাগ দৃষ্টি রাখা এবং সম্মিলিতভাবে করণীয় নির্ধারণ করা।

তিতাস উপজেলা তাঁতীলীগের আহ্বায়ক মোঃ রেজাউল ইসলাম মোল্লা বলেন, মাদকের কারণেই এসব চুরি ডাকাতি হচ্ছে। মাদক বন্ধ করলেই অটোমেটিক চুরি ডাকাতি বন্ধ হয়ে যাবে। নেশার টাকা জোগাড় করতেই নেশাখোররা এসব অপকর্ম করছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published.