ফেনীতে ফেসবুক লাইভে এসে স্ত্রীকে কুপিয়ে হত্যা করে ৯৯৯ নাম্বারে কল দিয়ে স্ব-ইচ্ছায় গ্রেফতার

অপরাধ

অনলাইন নিউজ ডেস্ক :
ফেনীতে ফেসবুক লাইভে এসে স্ত্রীকে কুপিয়ে হত্যা করেছেন স্বামী। ঘটনায় নিহত গৃহবধূর স্বামী ওবায়দুল হক টুটুলকে (৩২) আটক করেছে পুলিশ। বুধবার (১৫ এপ্রিল) দুপুরে ফেনী পৌরসভার উত্তর বারাহীপুর ভূঁইয়া বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে।

পুলিশ ও নিহতের বোন রেহানা আক্তার জানান, ৫ বছর আগে কুমিল্লা জেলার চৌদ্দগ্রামে গুনবতী এলাকার আকদিয়া গ্রামের সাহাবুদ্দিনের মেয়ে তাহমিনা আক্তারের সঙ্গে ওবায়দুল হক টুটুলের প্রে মের সম্পর্কে বিয়ে হয়। কিন্তু বিয়ের পর থেকে আর্থিক অস্বচ্ছলতা নিয়ে তাদের পরিবারের মাঝে প্রায় সময় ঝগড়া হয়ে আসছিল। এরইমধ্যে স্বামী টু টুল মেয়ের পরিবারের কাছ থেকে বেশ কিছু টাকাও নেয়। কিন্তু আরো টাকার জন্য চাইলে তারা অস্বী কৃতি জানায়।

একপর্যায় দুপুরে ফেসবুক লাইভে এসে স্বামী টুটুল তার স্ত্রীকে এলোপাতাড়ি দা দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করে। পরে হত্যাকারী টুটুল নিজেই পুলিশকে ৯৯৯ মুঠোফোনে খবর দিলে পুলিশ ফেনী মডেল থানাকে জানায়। পরে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে হত্যাকারীকে গ্রেফতার করে এবং হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত দা ও ফেসবুকে প্রচার চালানো মোবাইল জব্দ করে।

ফেনী মডেল থানার পরিদর্শক জানান, পারিবারিক কলহের জের ধরে এ ঘটনা ঘটেছে বলে প্রাথমিক ভাবে ধারণা করা হচ্ছে। তবু বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। লাশ ময়না তদন্তেরর জন্য ফেনীর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে।

ফেনী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আলমগীর হোসেন বলেন, ফেস বুক লাইভে হত্যার পর টুটুল নিজেই ৯৯৯ এ ফোন দিয়ে হ ত্যার কথা জানায়। পরে আমরা তাকে ধরতে গিয়ে দুই পাশের দরজা আটকানো পাই। পরে ওই নারীর গলাকাটা লাশ উ দ্ধার ও নিহতের স্বামীকে আটক করা হয়েছে। এ সময় মোবাইল সেট জব্দ করা হয়েছে।

ওবায়দুল হক টুটুল ঢাকার একটি বে সরকারি প্রতি ষ্ঠানে চাকরি করে। তাদের ঘরে দেড় বছরের একটি মেয়ে সন্তান রয়েছে। সে একই এলাকার গোলাম মা ওলা ভুঞার ছেলে।

ভিডিওতে দেখা যায়, খুন করার আগে টু টুল বলছিল, একজনের জন্য তার পরিবার ধ্বংস হয়ে গেছে। ৮ মাস বয়সে তার মে য়েকে রেখে চলে যায় সে। তার সারাজীবন ধ্বংস হয়ে গেছে তার স্ত্রীর জন্য এমন দাবি করে ক্ষোভ প্রকাশ করতে করতে এক পর্যায়ে স্ত্রীকে এলোপাতাড়ি কোপাতে থাকে টুটুল। কোপানোর পরপরই নিস্তেজ হয়ে যান ভুক্ত ভোগী নারী।

এরপরই টুটুল বলতে থাকে, সে এখন শেষ। আপনারা আমার বাবা-মা ও এ তিম মেয়েকে দেখে রাখবেন। এই খু নের সাথে তিনি নিজেই জ ড়িত এবং অন্য কেউ এর সাথে সংশ্লিষ্ট নয়, এমন টা বলতে থাকেন তিনি।

লাইভ ভিডি ওটির ক্যাপশনে লেখা ছিল, সবাই আমাকে ক্ষমা করবেন। আমার বাবা-মা, ভাই-বোন ও অনাথ মেয়েটার খেয়াল করবেন।

খুন করার লাইভ ভিডিওর পর, একটি মেয়েকে নিয়ে আরেকটি ভিডিও পোস্ট করে টুটুল ভুইয়া। সেখানে তার দাবি, তার মেয়ের যখন ৮ মাস বয়স তখন সে (তার স্ত্রী) ছেড়ে চলে যায়। এখন আবার সে ফেরত এসেছে। তার পুরো পরিবার ব্ল্যাক মেইল করে অনেক সমস্যায় ফেলেছে। বাচ্চা মেয়েটাকে অনেক নির্যাতন করা হয়েছে। এরপর তিনি নিজেও আত্ম হত্যার ইঙ্গিত দেয় ওই ভিডি ওতে। তবে খুন করার লাইভ ভিডিওটি ঘণ্টা খানেক পর আর টুটুলের প্রোফাইলে পাওয়া যায়নি।

টুটুল পুলিশকে জানিয়েছে, সে ঢাকায় থাকা অবস্থায় তার স্ত্রী তাহমিনা পর কী য়ায় জড়িয়ে পড়ে। এটা নিয়ে তাদের মধ্যে ঝামেলা হয়। তাহমিনার বাড়ি থেকে টাকা চেয়ে মানসিক হয়রানি করা হতো বলে দাবি করেন টুটুল। আটকের পর টুটুল পুলিশের কাছে খুনের কথা স্বীকার করে।

Leave a Reply

Your email address will not be published.