কুমিল্লার সদর দক্ষিণের কালীর বাজার হাইস্কুল সভাপতির বিরুদ্ধে টাকা আত্মসাতের অভিযোগ

অপরাধ

মাত্র ৪ ট্রাক মাটি ভরাটে প্রকল্পের ৩ লাখ টাকা গায়েব

এম শাহীন আলম :
কুমিল্লা সদর দক্ষিণ উপজেলা আওয়ামীলীগের বর্তমান সাংগঠনিক সম্পাদক ও কালীর বাজার হাই স্কুলের সভাপতি কথিত ভূয়া ডাঃ আমিনের বিরুদ্ধে দলের স্থানীয় নেতা-কর্মীদের নিকট থেকে ব্যবসার কথা বলে নানান বাহানায় টাকা হাতিয়ে নেওয়া ও স্কুলের মাঠে মাটি ভরাটের নামে প্রকল্পের টাকা উত্তোলনসহ নানা অভিযোগ পাওয়া গেছে।

গত বৃহস্পতিবার (২৮ শে অক্টোবর) দুপুরে গলিয়ারা দক্ষিণ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জামাল প্রধানের বক্তব্য আর ভুক্তভোগী দলীয় নেতারা এ অভিযোগ তোলেন যা বর্তমান নেট দুনিয়ায় ভাইরাল।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অনেক দলীয় নেতাকর্মীরা জানান, আ’লীগ নেতা কথিত ভূয়া ডাক্তার আমিন দলীয় ব্যানারে নামের পাশে ডাক্তার লাগিয়ে নিজেকে ডাক্তার পরিচয় দিলেও মূলত তিনি কখন কোন মেডিক্যালে পড়াশোনা করে ডাক্তারী পাশ করেছেন বলে এলাকার কারো জানা নেই। তারা জানান, তিনি মূলত গ্রামের ছোট্ট একটা ফার্মেসিতে এক সময়ে ঔষধ বিক্রি করতেন। কোন রকম ফার্মেসি দোকানদার থেকে স্হানীয় জেলা আওয়ামীলীগ নেতাদের তেলবাজি করে আর উপজেলা চেয়ারম্যান গোলাম সারওয়ার সাহেবের চামচামি করে আজ এই আমিন সদর দক্ষিণ উপজেলা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক পদে অধিষ্ঠিত হন। এর পরেই শুরু হয় দলীয় নেতাকর্মীদের কাছ থেকে বিভিন্ন রকম মিথ্যাা বুলি আর টাল-বাহানা করে টাকা আত্মসাৎ করার মতো এমন অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। এখন তিনি নিজে প্রাইভেটকারে চড়ে ও নিজেকে বিভিন্ন জায়গায় অনেক অর্থ বিত্তশালী পরিচয় দিয়ে বেড়ান আর এই সুযোগে মানুষের সাথে নানান অপকর্ম করে যাচ্ছেন। এছাড়াও তিনি সদর দক্ষিণ উপজেলার গলিয়ারা দক্ষিণ ইউনিয়নের কালিরবাজার হাই স্কুলের সভাপতি পদেও অধিষ্ঠিত আছেন। সভাপতি হওয়ার পর তার বিরুদ্ধে নানান অভিযোগ থাকলে সাম্প্রতিককালে ওই স্কুলের মাঠে মাটি দিয়ে ভরাটের জন্য ৩ লক্ষ টাকার একটি বরাদ্দ আসে। কিন্তু এই প্রকল্পের ৩ লাখ টাকার বরাদ্দ থেকে মাত্র ৪ ট্রাক মাটি মাঠে ফেলে বাকি টাকা আত্মাসাত করার অভিযোগ উঠেছে তার বিরুদ্ধে। এছাড়াও ওই বরাদ্দ আসার পর স্কুলের প্রধান শিক্ষক রৌশনের স্বাক্ষর ছাড়াই এই আ’লীগ নেতা কথিত ভূয়া ডাক্তার আমিন ২৫% টাকা উত্তোলন করেন বলে বিষয়টি সাংবাদিকদের নিশ্চিত করেছেন সদর দক্ষিণ উপজেলা প্রকল্প কর্মকর্তা মিজান। তিনি প্রধান শিক্ষকের স্বাক্ষর ছাড়া কিভাবে টাকা উত্তোলন করেন সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের কোন উত্তর দিতে পারেনি প্রকল্প কর্মকর্তা মিজানুর রহমান। স্হানীয়দের অভিযোগ এই আমিনের ইনকাম সোর্সটা আসলে কি? একটা গাড়ির মাসিক মেন্টেনেস খরচ কত? সে এমন বিলাসী জীবনের আয়ের উৎস টা কি? স্হানীয় এলাকাবাসী ও স্হানীয় আওয়ামীলীগ নেতাকর্মীদের অভিযোগ এই কথিত ভূয়া ডাক্তার আমিন যেকোন বিষয়ে উপজেলা চেয়ারম্যান গোলাম সারওয়ার ভাইয়ের নাম ভাঙ্গিয়ে চলে নিজেকে অর্থমন্ত্রী পরিবারের এবং উপজেলা চেয়ারম্যান গোলাম সারওয়ার সাহেবের খুব ঘনিষ্ঠজন এবং ঘরের লোক বলে দাবী করে অবলীলায় সকল অপকর্ম করে যাচ্ছেন। স্হানীয়দের দাবী উপজেলা চেয়ারম্যান গোলাম সারওয়ার সাহেবের আস্কারা পেয়েই কথিত ভূয়া ডাক্তার আমিন বেপরোয়া হয়ে একটার পর একটা অপকর্মে লিপ্ত হচ্ছেন।স্হানীয় আ:লীগ নেতাকর্মীরা বলেন,উপজেলা চেয়ারম্যান গোলাম সারওয়ার ভাই যদি তাকে পাত্তা না দেয় তাহলে কথিত ভূয়া ডাক্তার আমিন কখনো কোন অপকর্ম কিংবা কোন অপরাধ করতে একশো বার ভাববে।

উপজেলার গলিয়ারা (দক্ষিণ) ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জামাল প্রধান অভিযোগ করেন, আ’লীগ নেতা আমিন একটি ব্রিজ করার কথা বলে পার্টনার হিসেবে আমাদের ৪ জন থেকে টাকা নেয়। আমার সাড়ে ১১ লক্ষ ও জিয়া মেম্বারের ৫ লক্ষ টাকাসহ অন্যদের টাকা দিবে দিচ্ছে বলে গড়িমসি করে। তাকে শায়েস্তা করতে ১ মিনিটের ব্যাপার হলেও অর্থমন্ত্রীর ভাই কি বিচার করে তার আসায় আমরা চেয়ে আছি।

অভিযোগের বিষয়ে স্হানীয় সংবাদকর্মীরা সরেজমিনে গিয়ে আ’লীগ নেতা আমিনের নিকট জানতে চাইলে তিনি গণমাধ্যম কর্মীদের কথা বলার শুরু থেকেই জামাত-শিবির বলে দেখে নেওয়ার হুমকি দিয়ে বলেন, আমি আ’লীগ করি বলেই এতটুকু আসছি। আর কোন মায়ের পোত বলতে পারবে আমি অনিয়ম করি।

কথিত ভূয়া ডাক্তার আমিনের ব্যপারে উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি ও উপজেলা চেয়ারম্যান গোলাম সারওয়ার কে তার মোবাইল ফোন করে তাকে কলে পাওয়া যায়নি।

Leave a Reply

Your email address will not be published.