কুমিল্লার লাকসামে ৬ মাসেও খোঁজ মেলেনি আব্দুল বারেকের

অন্যান্য

আমিনুল ইসলাম :
কুমিল্লার লাকসাম উপজেলার কান্দিরপাড় ইউনিয়নের খুনতা গ্রামের মৃত আব্দুল মসজিদের ছেলে আব্দুল বারেক ২০২৩ ইং সনের ২১ আগষ্ট থেকে নিখোঁজ রয়েছে। আব্দুল বারেকের সন্ধান পেতে পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি এবং তার বোন রোকসানা বেগম বাদী হয়ে ২৮ আগস্ট ২০২৩ ইং লাকসাম থানায় ১৩৫২ নং জিডি করেছে। পরবর্তীতে আব্দুল বারেক নিখোঁজের আইনি প্রতিকার চেয়ে কুমিল্লার বিজ্ঞ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ৬ নং আমলি আদালতে ২৫ সেপ্টেম্বর২০২৩ ইং তারিখে বারেকের ভাই আবুল কাশেম বাদী হয়ে নিখোঁজ বারেকের স্ত্রী রাশেদা বেগম সহ পাঁচ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে। আব্দুল বারেক নিখোঁজ হওয়ায় তার ভাই ও বোন বাদী হয়ে জিডি ও মামলা করলেও এখনো বারেকের কোনো খোঁজ মেলেনি। মামলাটি বর্তমানে পিবিআই তদন্ত করছে। এদিকে বারেকের উদ্ধার চেয়ে পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি, জিডি ও মামলার বাদিসহ পাঁচ জনের বিরুদ্ধে কুমিল্লার একই আদালতে নিখোঁজ বারকের স্ত্রী রাশেদা বেগম বাদী হয়ে আরেকটি মামলা করেছে। ওই মামলাও পিবিআইকে তদন্ত করার নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। মামলা সুত্র জানিয়েছে, নিখোঁজ আব্দুল বারেক দীর্ঘ ২৫ বছর প্রবাসে ছিল। সেই সুবাদে অনেক অর্থকড়ি তার স্ত্রী রাশেদা বেগমের হস্তগত হয়।
২০২২ সালে আব্দুল বারেক দেশে আসলে স্ত্রীর কাছে রক্ষিত টাকা-পয়সার হিসেব নিয়ে স্ত্রী রাশেদা বেগম, ছেলে রাশেদ ও মেয়ে জান্নাতুল ফেরদৌস বিথীর সাথে দ্বন্দ্ব শুরু হয়। ওই দ্বন্দ্বে আব্দুল বারেককে মেরে বাড়ি থেকে বের করে দিয়েছে মর্মে আব্দুল বারেক ২০২৩ সালের ২৭ এপ্রিল লাকসাম উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবরে দরখাস্ত দিয়েছিল। ওই দরখাস্তের আলোকে কান্দিরপাড় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানকে ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য নির্দেশ দিয়েছিলেন তখনকার লাকসাম উপজেলা নির্বাহী অফিসার মাহফুজা মতিন।
ওই নির্দেশের আলোকে কান্দিরপাড় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ওমর ফারুক ২০২৩ সালের ৯ মে বারেকের স্ত্রী রাশেদা বেগম, ছেলে রাশেদ ও মেয়ে জান্নাতুল ফেরদৌস বিথিকে ইউনিয়ন পরিষদে হাজির হওয়ার জন্য নোটিশ প্রদান করেন। ওই নোটিশে তারা হাজির না হওয়ায় ১৬ মে তারিখে দ্বিতীয় দফায় হাজির হওয়ার জন্য নির্দেশ করেন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ওমর ফারুক। এই তারিখে উভয়পক্ষ হাজির হইলে ইউপি চেয়ারম্যান বিষয়টি সমঝোতা করে দেন বলে জানা গেছে। রাশেদার চাচাতো ভাই আব্দুর রহমানের সাথে তার দীর্ঘদিনের পরকীয়ার সম্পর্ক এবং রাশেদার ভাই আবুল হাসেম সাড়ে ৭ লাখ ও রাশেদার আত্মীয় আবু বকর ৫ লাখ এই দুই আত্মীয় সাড়ে ১২ লাখ টাকা হাওলাত নেয় রাশেদা থেকে। রাশেদার স্বামী আব্দুল বারেক এই টাকা চাওয়ার কারণেই বিবাদ শুরু হয় বলে বিভিন্ন সূত্র জানিয়েছে। লাকসাম থানার জিডি সংক্রান্ত বিষয়ে অফিসার ইনচার্জ ওসি মোঃ শাহাবুদ্দিন বলেন, জিডির তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই আনোয়ার হোসেনকে জিজ্ঞেস করেছি তদন্তকারী কর্মকর্তার কোন ট্রেস পায়নি। তিনি আরো বলেন, এই নিখোঁজ সংক্রান্ত বিষয়ে আদালতে মামলা হয়েছে এবং পিবিআই মামলা তদন্ত করছে বলে শুনেছি। পিবিআই পুলিশ পরিদর্শক বিপুল চন্দ্র দেবনাথ বলেন, মামলাটি গুরুত্ব সহকারে তদন্ত চলছে ভালো কিছু বের করার চেষ্টা করছি।

Leave a Reply

Your email address will not be published.