স্বাধীনতার সুবর্ন জয়ন্তীতে বরগুনার গর্ব সিরাজ উদ্দিন আহমেদ

অন্যান্য

মোহাম্মদ মেজবাহ উদ্দিন,বরগুনা থেকে :
গতকাল শনিবার সন্ধ্যায় বরগুনা জেলা প্রশাসনের আয়োজনে ১০ দিনব্যপি স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী মেলার সমপনি অনুষ্ঠিত হয়ে গেল। দিনের পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন স্বাধীনতা পদক পাওয়া ব্যক্তিত্ব সিরাজ উদ্দিন আহমেদ। তিনি তার
বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রীর কাছে বরগুনার পায়রা ও বিষখালী নদীতে দুটি সেতু নির্মানেরও দাবি জানান।

শনিবার সন্ধ্যায় বরগুনা জেলা প্রশাসনের আয়োজনে ১০ দিনব্যপি স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী মেলার সমপনি দিনের পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ দাবি জানান।

বরগুনা মহাকুমার সাবেক এসডিও সিরাজউদ্দীন আহমেদ বক্তব্যে বলেন, আমি যখন ১৯৬৯ সালের ৮ মে বরগুনা মহাকুমা এসডিও হিসেবে যোগদান করি। সেসময় বরগুনায় শুধুমাত্র কয়েকটি গোল পাতার ঘর ছাড়া কিছু ছিলোনা। সময় বরগুনায় শিক্ষার অবস্থা ছিল খুবই করুন।একটি জাতির উন্নয়নের জন্য শিক্ষার বিকল্প নেই। আমি তখন অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান তৈরি করার উদ্যোগ নিয়েছিলাম। আজকে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। দক্ষিণাঞ্চলে ইর্ষণীয় উন্নয়ন হচ্ছে । আমি এই অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে দুটি দাবি পেশ করতে চাই। এই বরগুনা জেলার উন্নয়নে বরগুনার পায়রা ও বিষখালী নদীতে দুটি সেতু চাই। কারণ, এ অঞ্চলের অর্থনৈতিক উন্নয়নকে তরান্বিত করতে এই দুটি সেতুর গুরুত্ব অপরিসীম। এ দুটি নদীতে সেতু হলে মংলা পায়রা বন্দরের সাথে সংযোগ স্থাপিত হবে। এ জেলার মানুষের কাছে আমার ঋণ আছে। আমি যে সম্মান পেয়েছি সে অর্জণের জন্য এই জেলার মানুষের ভূমিকা ছিল। আমার দাবি পুরণ হলে খুবই আনন্দিত হব ও কৃতজ্ঞ হবো।

পরে তিনি অনুষ্ঠানের অতিথি ও মেলার দর্শনার্থীদেরকে স্বাধীনতা পদক প্রদর্শন করেন।

ইতিহাসবিদ সিরাজ উদ্দিন আহমেদ ১৯৪১ সালে ১৪ অক্টোবর বরিশাল জেলার বাবুগঞ্জ উপজেলার চাঁদ পাশা ইউনিয়নে জন্মগ্রহণ করেন। বাবার নাম জাহান উদ্দীন ফকির, মায়ের নাম লাইলি বেগম। পাঁচ বোন ও চার ভাইয়ের মধ্যে তিনি ছিলেন সবার বড়।

নিজ গ্রামে প্রাথমিক শিক্ষা ও শায়েস্তাবাদ হাই স্কুল থেকে ১৯৫৬ সালে মেট্রিক পাস করেন। ১৯৫৮ সালে বরিশাল বিএম কলেজ থেকে আইএ ও ১৯৬০ সালে বিএ পাস করেন। এছাড়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৬২ সালে অর্থনীতিতে এমএ এবং ১৯৬৮ সালে এলএলবি পাস করেন।

একাধারে তিনি ‘জাতীয় নারী উন্নয়ন নীতিমালা’র খসড়ার প্রণেতা, বাবুগঞ্জ ডিগ্রী কলেজের প্রতিষ্ঠতা। এছাড়া তিনি দৈনিক বাংলাদেশ সময় পত্রিকার উপদেষ্টা, জাতীয় শিক্ষা নীতির প্রণয়ন কমিটির সদস্য, ইসলামিক ফাউন্ডেশনের বোর্ড অব গভর্নর, বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেট সদস্য ও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় সিনেট সদস্য, বাংলাদেশ বিনিয়োগ বোর্ডের নির্বাহী চেয়ারম্যান এবং পাবলিক সার্ভিস কমিশনের সদস্য ছিলেন।

অবদান রেখেছেন বরিশাল বিভাগের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের উন্নয়নে। দীর্ঘদিন ধরে দায়িত্ব পালন করেছেন বরিশাল বিভাগ উন্নয়ন সমিতির সাধারণ সম্পাদক হিসেবে। এছাড়া বরগুনা জেলার উন্নয়নে অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে, জেলার জনগণ বরগুনার টাউন হলের নাম করণ করেছেন সিরাজ উদ্দীন মিলনায়তন। বরগুনায় তার নাম অনুসারে সিরাজ উদ্দিন সড়ক ও রয়েছে। এটা বরগুনার গর্ব।

তিন সরকারের বহু উচ্চ পদেও দায়িত্ব পালন করেছেন। ২০০৩ সালে ১৪ অক্টোবর তিনি চাকরি জীবন থেকে অবসর নেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published.