ভোলায় বিআরটিএ এডি’র নিয়ন্ত্রণে দালাল চক্র! অফিস খরচের নামে ঘুষ ছাড়া মিলছে না কাঙ্খিত সেবা

অপরাধ

অনিয়ম,ঘুষ বানিজ্য আর সেবা গ্রহিতাদের হয়রানি বন্ধে সংশ্লিষ্ট দপ্তর প্রধানের দৃষ্টি আকর্ষণ

এম শাহীন আলম :
বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ) ভোলা সার্কেল অফিসে খোদ সহকারী পরিচালক এস এম মাহবুবুর রহমানের নিয়ন্ত্রণে চলে দালাল চক্রের একটি সিন্ডিকেট।এছাড়া দালাল চক্রের মাধ্যমে অফিস খরচের নামে ঘুষ বানিজ্য ছাড়া মিলছে না কাঙ্খিত সেবা, এমনটিই অভিযোগ করেছেন সেবা নিতে আসা যানবাহনের সাথে সংশ্লিষ্ট একাধিক সেবা গ্রহিতা ব্যক্তিরা। সরেজমিনে জানা যায়,এই অফিসটিতে সাধারণ মানুষ সেবা নিতে এসে সরকারের নির্ধারিত ফি ছাড়াও ঘুষ/উৎকোচ হিসেবে দিতে হচ্ছে অফিস সংশ্লিষ্টদের চাহিদা অনুযায়ী বারতি টাকা। আর অফিস খরচের নামে বাড়তি টাকা না দিলে বিভিন্ন অজুহাতে হয়রানির অভিযোগ রয়েছে অহরহ।

সরেজমিনে অনুসন্ধানে জানা যায়,এসব অবৈধ কাজ করে দেওয়ার জন্য বিআরটিএ অফিসে রয়েছে এডি এস এম মাহবুবুর রহমানের পোষা বেশ কয়েক জনের একটি দালাল চক্র। যারা নিজেকে অফিসের কর্মকর্তা কর্মচারীদের কাছের লোক পরিচয় দিয়ে কাজ করে বলে জানা যায়। যদি কেউ এসব দালালদের চোখ ফাঁকি দিয়ে সরাসরি অফিসে আসে তখন তাকে বিভিন্ন অজুহাতে অসংখ্য বার হয়রানীর শিকার হতে হয়। ভুক্তভোগী এবং স্হানীয় প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবী ভোলা বিআরটিএ অফিসে হয়রানী,অনিয়ম, দুর্নীতি আর ঘুষ বানিজ্য দীর্ঘদিনের। তবে অভিযোগ রয়েছে বর্তমান এডি এস এম মাহবুবুর রহমান যোগদানের পর থেকে দালাল চক্র আর অফিস খরচের নামে ঘুষ বানিজ্য বেপরোয়া ভাবে বেড়েছে।

সরেজমিনে অনুসন্ধানকালে ভোলার চরফ্যাশন থেকে আসা জসিম উদ্দিন পাটোয়ারী গণমাধ্যমকে জানান, এই অফিসটিতে দালাল ছাড়া সঠিক নিয়মে গাড়ির রেজিট্রেশন ও ড্রাইভিং লাইসেন্স সহ যে কোন সেবা পাওয়া ভাগ্যের ব্যপার। যার বাস্তব প্রমাণ আমি নিজে। ড্রাইভিং লাইসেন্স ফি অপেশাদার সর্বোচ্চ ৪১৫৫ টাকার পরিবর্তে আমার কাছে এক দালাল সাড়ে ১৪ হাজার টাকা আরেক দালান চাইলো ১২৫০০টাকা।এরপর বাড়ি থেকে ৭০/৮০ কিলোমিটার দূরের পথ দুই থেকে তিনবার ভোলা ডিসি অফিসে আসা যাওয়া খরচ তো আছেই।

ভোলার চরফ্যাশন এর জসিম উদ্দিন পাটোয়ারীর মতো কথা হয়েছে বোরহান উদ্দিনের হুমাউন মিয়া এবং ভোলা সদরের রিয়াজ উদ্দীনের সাথে। তাদের সকলেরও অভিযোগ একই সূত্রে গাঁথা। তারা বলেন, ভোলা বিআরটিএ অফিসে সরকারি ফি দিয়ে কোন কাজ করতে গেলে বিভিন্ন অজুহাতে হয়রানির শেষ নেই।তবে দালাল ধরে কন্ট্রাকে আসলে কোন প্রশ্ন তো দূরের কথা শুধু পরীক্ষার তারিখ জানানো হয় মাত্র। আর দালালের মাধ্যমে না আসলে অজুহাত আর হয়রানির শেষ নেই।

ভোলা বিআরটিএ সার্কেল অফিসে সেবা নিতে আসা যানবাহনের সাথে সংশ্লিষ্টদের অভিযোগ যেখানে অফিস খরচের কথা বলে ঘুষ বানিজ্য চলে সেখানে সঠিক নিয়মে সেবা পাওয়া ভাগ্যের ব্যপার। ভোলা জেলা প্রশাসন কার্যালয়ের আশপাশের স্হানীয় বসবাসরত ব্যক্তিদের সাথে বিআরটিএ অফিসের সেবার মান সম্পর্কে জানতে চাইলে একাধিক দোকানী জানান,কোন কাজ করতে গেলে অনিয়ম আর ঘুষ তো সব সময়ে চলে তবে বর্তমান বড় অফিসার(সহকারী পরিচালক) আসার পর থেকে দালালদের সংখ্যা বেড়ে গেছে,আর ঘুষের টাকা না দিলে বহু দিন ঘুরতে হয় এবং সহজে কাজ হয় না।আর দালাল ধরে কাজ করলে আর হয়রানি হতে হয় না,পরীক্ষায় কিছু না লিখলেও পাশ দেখানো হয়।আর দালাল না ধরে গেলে পরীক্ষা ফেল দেখানো হয় বলে জানান।

ভোলা বিআরটিএ সার্কেল অফিসের সহকারী পরিচালক এস এম মাহবুবুর রহমানের সাথে অভিযোগের বিষয় গুলো জানিয়ে তার বক্তব্য চেয়ে একাধিক বার তার মোবাইল ফোনে নক করেও তাকে লাইনে পাওয়া যায়নি। অনুসন্ধান অব্যাহত রয়েছে পরবর্তী সংখ্যায় অনিয়মের বিষয়ে আরো বিস্তারিত নিউজের দ্বিতীয় পর্বে জানানো হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published.