খুলনার বটিয়াঘাটায় ইলিশ মাছ শিকারীরা ব্যস্ত সময় পার করছে

অন্যান্য

মহিদুল ইসলাম শাহীন :
সরকার ঘোষিত ৬৫দিন নদীতে মাছমারা বা জাল ধরা বন্ধ থাকার কারণে ব্যাস্ত সময় পার করছে খুলনার বটিয়াঘাটা উপজেলা ইলিশ জেলেরা। সুত্রে প্রকাশ, উপজেলা ৭ ইউনিয়নের জেলেরা বিভিন্ন নদ-নদীতে ইলিশ মৌসুম গত ২৪ জুলাই শনিবার ইলিশ জেলেরা জাল ধরা শুরু করছে। মৎস্য অধিদপ্তর গত ২০ মে থেকে ২৩ জুলাই পর্যন্ত মোট ৬৫ দিন মাছের বংস বিস্তারের লক্ষ্যে সমুদ্র ও নদ-নদীতে মাছ ধরা সম্পূর্ণ বন্ধ রাখে। ৬৫ দিনের মাছ ধরা নিষিদ্ধের মেয়াদ শেষ হলে গত ২৪ জুলাই শনিবার থেকে উপজেলার বিভিন্ন নদ-নদীতে কিছু কিছু ইলিশ জেলে জাল-নৌকা নিয়ে ইলিশ মাছ ধরা শুরু করেছে। বটিয়াঘাটা উপজেলার ৭ইউনিয়নে মোট ৩৫১৭ জন কার্ডধারী জেলে রয়েছে। এদের প্রত্যেককে ৬৫ দিন মাছ ধরা নিষেধ কালীল সময়ে ২ কিস্তিতে ৯৫ কেজি করে চাল বরাদ্ধ দিয়েছে সারকার মৎস্য অধিদপ্তরে মাধ্যমে। মৎস্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুসারে, এ উপজেলায় মোট ৭শ ইলিশ জেলে রয়েছে। সরকারের মৎস্য অধিদপ্তরে নদ-নদীতে মাছ ধরা নিষেধাজ্ঞার কারণে সাধারণ মানুষ ‘মাছের রাজা’ ইলিশ মাছের স্বাদ ভুলে যেতে বসেছে।
সরেজমিনে ঘুরে জানা যায়, উপজেলার কাজীবাছা, শৈলমারী, ঝপঝপিয়া, পার বটিয়াঘাটা,গজালিয়া, বারোভুঁইয়া, বুনারাবাদ এবং বারআড়িয়ার ভদ্রা নদীতে ইলিশ মৌসুমে এ সকল জেলেরা ইলিশ মাছ ধরে জীবন জীবিকা নির্বাহ করে আসছিল। তবে অধিকাংশ জেলে জানান গত ইলিশ মৌসুমে এ উপজেলার সকল নদ-নদীতে প্রচুর ইলিশ ধরা পড়েছিল এবং জেলেরা অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হয়েছিল। সবে মাত্র এ বছর ইলিশ মৌসুম শুরু হলেও এ সকল নদ-নদীতে ইলিশের কোন দেখা মিলছে না। মৌসুমের শুরুতে ঋন গ্রহীতা মহাজন ও বিভিন্ন এনজিওর কাছ থেকে চড়া সুদে ঋন নিয়ে ঋনের জালে আবদ্ধ হয়ে ইলিশ ধরা শুরু করেছে। শুরুতেই এ সকল নদ-নদীতে যা দুই-একটি ইলিশ জেলেদের জালে ধরা পড়ছে তার দাম আকাশ ছোঁয়া। ৫’শ গ্রামের ইলিশ মাছ বিক্রী হচ্ছে ৬’শ থেকে ৭’শ টাকা এবং ৭‘শ থেকে ১ কেজি ইলিশ বিক্রী হচ্ছে ১ হাজার টাকা থেকে ১২‘শ টাকা। যা সাধারন মানুষের ক্রয় ক্ষমতার বাইরে। যে কারনে এ বছর উপজেলার অধিকাংশ সাধারন মানুষ ইলিশের স্বাদ পাওয়া থেকে বঞ্চিত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। যা কোমলমতি শিশুদের বইয়ের পাতায় পড়ার মত “ইলিশ হচ্ছে মাছের রাজা” ইলিশ লবন ও গভীর পানির মাছ এবং খেতে খুব সুস্বাদু ইত্যাদি। উপজেলার অনেক পরিবারের শিশুরা এ বছর ইলিশের দেখা এখনও পর্যন্ত পাইনি। এ ব্যাপারে রায়পুর গ্রামের কার্ডধারী ইলিশ জেলে পরিমল মন্ডল হাজরা জানান, নানা কারণে অন্যান্য বছরের তুলনায় এ বছর নদ-নদীতে মৌসুমের শুরুতেই ইলিশ জালে কম ধরা পড়ছে। কারণ নদীতে ইলিশ মৌসুমে সমুদ্র থেকে উঠিয়ে আসার পথে অবৈধভাবে বালি উত্তোলনকারীরা ড্রেজার দিয়ে নদী দখল করে বালি উত্তোলন করছে বলে দাবী করছেন তিনি। এতে নদীতে ইলিশ মাছের চলাফেরায় বিঘ্ন সৃষ্টি হচ্ছে বা নদীতে মাছ উঠে আসতে পারছে না। ইলিশ জেলে বারোআড়িয়ার দিপক, বুনারাবাদের দাউদ, বুজনিয়ার ইমান আলী ও মাথাভাঙ্গার মফিজ বলেন, ৬৫ দিন মাছ ধরা বন্ধ থাকার কারণে আশা করছি এবছর মাছ বেশি পাবো।
এ ব্যাপারে উপজেলা মৎস্য অধিদপ্তরে সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা মো. মনিরুল মামুন জানান, এ বৎসর ইলিশ মৌসুমে এ উপজেলার নদ-নদীতে ইলিশ মাছ অন্যান্য বছরের তুলনায় কম ধরা পড়ার সম্ভবনা রয়েছে। কারণ এ সকল নদ-নদীতে পলি পড়ে নাব্যতা হ্রাস ও স্রোতের গতিবেগ কমে গেছে। তাই এ সকল নদীতে ইলিশ মৌসুমের শুরুতে ইলিশ কম পাওয়া যাচ্ছে। তবে মৌসুমের শেষের দিকে কিছু ইলিশ ধরা পড়লেও পড়তে পারে বলে তিনি জানান

Leave a Reply

Your email address will not be published.