কুমিল্লার চান্দিনায় উপজেলা হাসপাতাল ওয়ার্ড বয় কর্তৃক রোগীর মেয়েকে ধর্ষনের চেষ্টা

অপরাধ

চান্দিনা প্রতিনিধি
গত ৩ সেপ্টেম্বর মঙ্গলবার রাত আড়াইটার দিকে চান্দিনা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের নারী ওয়ার্ডে ঘটনা ঘটে। এসময় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অন্যান্য রোগী ও তাদের স্বজনরা ওই ওয়ার্ড বয়কে হাতেনাতে আটক করে গণধোলাই দেয়।

এ ঘটনায় তিন সদস্যের একটি তদন্ত টিম গঠন করেছে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স কর্তৃপক্ষ।যৌন নির্যাতনকারী আবুল বাশার (৩৫) চান্দিনা উপজেলার কালেমসার গ্রামের মৃত আব্দুল আজিজ এর ছেলে।
তিনি চান্দিনা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কর্মরত ওয়ার্ডবয়।

হাসপাতালের নারী ওয়ার্ডে ২১নং বেডে চিকিৎসাধীন কুলছুম বেগম জানান- গত ৩১ আগস্ট আমার চিকিৎসার জন্য চান্দিনা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হই। আমার দেখাশোনা করতে আমার বড় মেয়েও আমার সাথে ছিল। মঙ্গলবার রাত অনুমান ২টা ৩৫ মিনিটের সময় ওয়ার্ডবয় আবুল বাশার আমার মেয়েকে ঝাপটে ধরে ধর্ষণের চেষ্টা করে। আমার মেয়ের চিৎকার শুনে আমার এবং অন্যান্য রোগীদের ঘুম ভাঙ্গলে ওই ওয়ার্ড বয় পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। এসময় অন্যান্য রোগীর স্বজনরা এসে তাকে গণধোলাই দেয়। আমি ওই ঘটনার সুষ্ঠু বিচার চাই।

একই কক্ষে থাকা রোগী শাহিনা আক্তার জানান- অন্যান্য দিন রাতে ওয়ার্ডে লাইট জ্বালানো থাকে। মঙ্গলবার রাত ১১টার পর ওই ওয়ার্ডবয় এসে লাইট অফ করে দিয়ে সবাইকে ঘুমাতে বলে চলে যায়। রাত অনুমান আড়াইটার দিকে হঠাৎ চিৎকারের শব্দ শুনে আমাদের ঘুম ভাঙ্গলে দেখি, ওয়ার্ডবয় দৌড়ে চলে যাচ্ছে। এসময় মেয়েটির মা (রোগী কুলছুম বেগম) পিছন থেকে ওই ওয়ার্ডবয়কে আটক করলে ওয়ার্ডবয় জোরাজোরি করে ছুটে যাওয়ার চেষ্টা করে।

হাসপাতালে ভর্তিরত অন্যান্য রোগী ও তাদের স্বজনরা অত্যন্ত ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন- মহিলা ওয়ার্ডে নারীরা ঘুমিয়ে পড়লে শরীরে কাপড়-চোপড় অনেক সময় ঠিক থাকে না। মহিলা ওয়ার্ডে পুরুষদের আসাই তো ঠিক না। এছাড়া হাসপাতালেই যদি নারীদের সুরক্ষা না থাকে তাহলে আর কোথায় নিরাপদ থাকবো ? আমরা এ ঘটনার দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তি চাই।

ওয়ার্ডবয় আবুল বাশার জানান- রাত ৮টা থেকে আমার ডিউটি ছিল। আমি রাত ১২টার সময় ঘুমিয়ে পড়ি। হঠাৎ চিৎকার শুনে আমি বের হইলে তারা (রোগী ও তাদের স্বজনরা) আমাকে মারধর করে মাথা ফাটিয়ে দেয়।

এ ব্যাপারে উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. আনোয়ার উল্যাহ্ জানান- রোগীর সাথে অনৈতিক কর্মটি অত্যন্ত দুঃখ জনক। এ ঘটনায় জুনিয়র কনসালট্যান্ট (গাইনি) ডা. হাছিনা আক্তারকে প্রধান করে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছি। এছাড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও থানা অফিসার ইন-চার্জকে বিষয়টি অবহিত করেছি।

এ ব্যাপারে থানা অফিসার ইন-চার্জ (ওসি) শামস্উদ্দীন মোহাম্মদ ইলিয়াছ জানান- প্রাথমিক তদন্তে যৌন হয়রানির বিষয়টির সত্যতা পাওয়া গেছে। আমরা লিখিত অভিযোগ পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) বিভীষণ কান্তি দাশ জানান- এ বিষয়ে জানার পর তদন্ত কমিটি গঠন করে তিন দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তাকে নির্দেশ দিয়েছি। দোষী ব্যক্তির বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published.