আশুলিয়া গুমাইল উচ্চবিদ্যালয় ব্যবস্থাপনা কমিটি নিয়ে নানান অনিময়ের অভিযোগ

অপরাধ

নিজস্ব প্রতিনিধি :
সাভার উপজেলার আশুলিয়ায় গুমাইল উচ্চবিদ্যালয় ব্যবস্থাপনা কমিটি নিয়ে নানা অনিয়মের অভিযোগ।কোন প্রকার নির্বাচন ছাড়াই বিশ বছর ধরে সভাপতি পদে বহাল রয়েছেন এক’ই ব্যক্তি। জানা যায় ১৯৯৩ সালে স্থানীয় কিছু গণ্যমান্য ব্যক্তি নিয়ে এবং আশুলিয়া’র গুমাইল গ্রামের কৃতি সন্তান মৃত মোঃআলাউদ্দীন মাষ্টারও বর্তমান আহ্বায়ক কমিটির সভাপতি মমতাজ উদ্দিন ভুঁইয়ার নেতৃত্বে একজন জাপানী নাগরিকের অর্থায়নে এলাকার গরিব অসহায় সুবিধা বঞ্চিত পরিবারের ছেলে মেয়েদের পড়া লেখার জন্য স্কুলটি গড়ে তুলেন।সে সময় স্কুলের প্রতিষ্ঠাতা প্রধান শিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয় মোঃআবুল কাশেম মন্ডল কে এবং স্কুল পরিচালনা, প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি পদে দায়িত্ব পান মোঃ ধনু মন্ডল।এর পর তাদের ঐক্যতা ও অক্লান্ত পরিশ্রম এবং সঠিক নেতৃত্বের মধ্যে দিয়ে খুব অল্প সময়ে ভালো সুনাম অর্জন করেন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি।কিন্তু প্রতিষ্ঠানটির শুরু লগ্ন থেকে ধনু মন্ডল সভাপতি পদে নেতৃত্ব দিলেও ১৯৯৩- ২০০০ সালের শেষের দিকে এই ৬-৭ বছর ধনু মন্ডল সভাপতিত্ব করার পর তিনি বয়সের ভাড়ে অবসর নেন সেই সময় স্থানীয় ময়-মুরুব্বিদের মতামত ও সিদ্ধান্তের ভিত্তিতে রদবদল হয় বর্তমান আহ্বায়ক কমিটির সভাপতি মোঃ মমতাজ উদ্দিন ভুঁইয়ার কাছে।তিনি ২০০০ সাল থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত সভাপতিত্ব করেন এবং বর্তমান আহ্বায়ক কমিটির সভাপতি হিসেবে আছেন বিদ্যালয়টিতে। কিন্তু মমতাজ উদ্দিন ভুঁইয়ার ২০ বছরের সভাপতিত্ব কে কেন্দ্র করে অনেক অনিয়ম দুর্নীতির ও নানা জল্পনা কল্পনার গুঞ্জন তৈরি হয়েছে এবং বিভিন্ন প্রশ্ন তুলেছেন জনমনে। কি সে অনিয়ম দুর্নীতি?, জানতে সংবাদকর্মীরা সরেজমিনে তথ্য সংগ্রহ করতে গেলে উঠে আসে ভিন্ন চিত্র।সংগৃহীত তথ্যের ভিত্তিতে জানা যায় বর্তমান সভাপতি মমতাজ উদ্দিন ভুঁইয়া ২০ বছর ধরে সভাপতিত্ব করে আসছেন ঠিক’ই কিন্তু স্ব-ইচ্ছায় নয়। মমতাজ উদ্দিন ভুঁইয়াকে বার বার সভাপতি পদে বহাল রেখে অন্য এক পক্ষ সুবিধা নিচ্ছেন বলে অভিযোগ অনেকের।কে বা কাহারাএই অন্য পক্ষ? জানতে আবারো অনুসন্ধান সংবাদকর্মীদের, সকল তথ্যের ভিত্তিতে জানা গেলো সে আর কেউ নয়। গুমাইল উচ্চ-বিদ্যালয়ের বর্তমান প্রধান শিক্ষক মোঃ বারেক মোল্লা।স্থানীয় কিছু লোক জন বলেন বারেক মোল্লা তার নিজের স্বার্থে বার বার মমতাজ উদ্দিন ভুঁইয়া কে সভাপতি পদে বহাল রাখার জোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। কেনো প্রধান শিক্ষক বার বার মোম তাজউদ্দিন ভুঁইয়া কে সভাপতির চেয়ারে রাখতে চান এমন প্রশ্নের উত্তর জানতে চাইলে,একজন অভিভাবক সদস্য মোঃ সরিফ মন্ডল বলেন মমতাজ উদ্দিন ভুঁইয়া একজন সৎ ও নিষ্ঠাবান মানুষ এবং কঠোর পরিশ্রমী ও ব্যস্ত মানুষ তিনি বেশিরভাগ সময় তার ব্যক্তিগত কাজে দেশের বাহিরে থাকেন যে কারনে তিনি স্কুলে ৯৯ ভাগ মিটিং অনুপস্থিত থাকেন।আর সেই সুযোগ কে কাজে লাগিয়ে প্রধান শিক্ষক বারেক মোল্লা বিভিন্ন অনিয়ম দুর্নীতি ও হিসাব গড়মিলের পায়তারাই মেতে উঠেন বলে জানান তিনি। তিনি আরো বলেন প্রধান শিক্ষক বারেক মোল্লার একজন দায়িত্ব জ্ঞানহীন মানুষ। তার দায়িত্বহীনতা ও গাফিলতির কারনে দিন দিন বিদ্যালয়টি ধংশের দিকে চলে যাচ্ছে।তিনি শিক্ষর্থীদের সাথে খারাপ আচরন করেন বলেও অভিযোগ করেন সরিফ মন্ডল।
আর এক জন অবিভাবক সদস্য সরিফ সরকার জানান গুমাইল উচ্চ-বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বারেক মোল্লার অনিয়ম দুর্নীতি ও সেচ্ছাচারিতার লেখিত অভিযোগ পত্র ঢাকা জেলা শিক্ষা অফিসে পাঠানো হয়েছে। বিষয়টি তদন্ত করে সত্যতা পাওয়া গেলে যথার্থ ব্যবস্থা নিবেন বলে জানিয়েছেন ঢাকা জেলা শিক্ষা অফিস কর্তৃপক্ষ। বর্তমান আহ্বায়ক কমিটির সভাপতি মোঃ মমতাজ উদ্দিন ভুঁইয়ার কাছে তার ২০ বছরের সভাপতিত্ব ও প্রধান শিক্ষক’র সেচ্ছাচারিতার কথা জানতে চাইলে তিনি বলেন। আমি ২০ বছর যাবৎ বিদ্যালয়ে সভাপতি পদে আছি এটা সত্য কিন্তু আমি বেশিরভাগ সময় নিজের পেশায় ব্যাস্ত থাকায় বিদ্যালয়টিতে সময় দিতে পারিনা। এখন আরো বয়স হয়ে গেছে আমার। আমি চায় বিদ্যালয়ের সকল কার্যক্রম থেকে অব্যাহতি নিতে,কিন্তু এলাকার লোকজন এবং বিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা আমার সম্মানের স্বার্থে আমাকে বার বার বিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা কমিটিতে রাখে।মুল আমার আর সেখানে থাকার কোন ইচ্ছে নেই। প্রধান শিক্ষক বারেক মোল্লার উপর আনা লেখিত অভিযোগের কথা সাভার উপজেলা শিক্ষা অফিসার কামরুন্নাহার কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন প্রধান শিক্ষকের ব্যাপারে আমার কাছেও এমন অভিযোগ আসছে আমি বিষিয়টি তদন্ত করে দেখেছি এবং একটি তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়া হয়েছে। আর ব্যবস্থাপনা কমিটির বিষয়টি আমি যতদুর জানি যে গত ৩ মাস আগে আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হয়েছে। এবং সেই আহ্বয়ক কমিটিতে বিগত দিনের সভাপতি মমতাজ উদ্দিন ভুঁইয়া কে আবারে সভাপতি পদে রাখা হয়েছে।যদিও ২০১৯ সংশোধনীয় আইনে লেখা আছে একজন ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি পদে দুই বারের অধিক ক্ষমতায় থাকতে পারবে না কিন্তু তারা তা মানছেনা। এটা ২০১৯ এর সংশোধনী আইন অনুযায়ী নিয়ম বহির্ভূত। এই বিষয় ও আমি বিদ্যালয় পরিদর্শন করে তাদেরকে সরাসরি অবগত করে আসি।সাভার উপজেলার সম্মানিত চেয়ারম্যান মনজুরুল আলম রাজিব এর সাক্ষরিত একটি ডিউ লেটার আমার হাতে আসলে তাৎক্ষনিক আমি কয়েক’শ স্থানীয় লোক জনের সামনে বিদ্যালয় প্রাঙ্গনে শরিফ সরকার নামে একজন অবিভাবক সদস্যকে সভাপতির ভারপ্রাপ্ত দায়িত্ব দিতে বলি কিন্তু প্রধান শিক্ষক আমার কথা এবং সাভার উপজেলা চেয়ারম্যান কে অমান্য করে নিজেরাই আহ্বায়ক কমিটি গঠন করেছেন। এটা দুঃখজনক বলেও জানান সাভার উপজেলা শিক্ষা অফিসার কামরুন্নাহার।
এ বিষয়ে গুমাইল উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বারেক মোল্লা কাছে জানতে চাইলে তিনি সব কিছু মিথ্যা এবং বানোয়াট বলে এরিয়ে যান।পরবর্তী অনুসন্ধানে পরের সংখ্যায় প্রকাশ করা হবে- পর্ব -১

Leave a Reply

Your email address will not be published.