অনুমতি ছাড়া গণশৌচাগারের সামনে দোকান দিলেন ওয়ার্ড কাউন্সিলর

অপরাধ

বিশেষ প্রতিবেদক :
গণশৌচাগারের (টয়লেট) সামনে অনুমতি ছাড়া দোকান নির্মাণ করে ভাড়া আদায়ের অভিযোগ উঠেছে ফারুক মিয়া নামে এক পৌর কাউন্সিলরের বিরুদ্ধে। ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌরসভার ৭নং ওয়ার্ডের আমিনপুরে জেলা পরিষদের জায়গায় অবৈধ ওই দোকানে কনফেকশনারি চালু করা হয়েছে।

জানা যায়, ১৯৯৭ সালে আমিনপুর গ্রামে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা পরিষদের জায়গায় সমন্বয় করে পৌরসভা একটি গণশৌচাগার তৈরি করে। একই বছরের সেপ্টেম্বর মাসে গণশৌচাগারটি উদ্বোধন করেন তৎকালীন পৌর চেয়ারম্যান আল মামুন সরকার। এর কয়েক বছর পর গণশৌচাগারটি প্রায় পরিত্যক্ত হয়ে যায়।

গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে পৌর নির্বাচনে ৭নং কাউন্সিলর হিসেবে জয়লাভ করেন ফারুক মিয়া। গণশৌচাগারের ঠিক পাশে জেলা পরিষদের মার্কেটে তার নিজস্ব কার্যালয়। জয়লাভের পর নিজ গ্রামের কোরবান মিয়া নামের এক ব্যক্তিকে পৌরসভার মালিকানাধীন গণশৌচাগারটি রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব দেন ফারুক মিয়া। কোরবান মিয়া দায়িত্ব নেওয়ার পাশাপাশি গণশৌচাগারটি কিছুটা সংস্কার করেন।

এ সময় গণশৌচাগারের সামনে তাকে একটি দোকান নির্মাণের নির্দেশ দেন কাউন্সিলর ফারুক মিয়া। কিন্তু জেলা পরিষদের মালিকানাধীন জায়গায় কোনো প্রকার অনুমোদন না নিয়ে স্থায়ীভাবে একটি দোকান নির্মাণ করা হয়। দোকানটি চালান কোরবান মিয়া। তার থেকে মাসিক ১৫০০ টাকার করে প্রতি মাসে ভাড়া নেন কাউন্সিলর ফারুক মিয়া।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে কোরবান মিয়া বলেন, আমার কাছে গণশৌচাগারটি হস্তান্তর করার পর তা সংস্কার করেছি। আগে অনেক অপরিষ্কার ছিল। সংস্কার করতে আমার অনেক টাকা খরচ হয়েছে। আর শৌচাগারের সামনের দোকানটি কাউন্সিলর ফারুক ভাইয়ের নির্দেশে আমি তৈরি করেছি। দোকানটির কাউন্সিলর ফারুক ভাইয়েরই।

তবে দোকান নির্মাণের নির্দেশ ও ভাড়া নেওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করে ওয়ার্ড কাউন্সিলর ফারুক মিয়া বলেন, কোরবান মিয়ার কথা সঠিক নয়। সে বসার জায়গা নেই বলে দোকানটি তৈরি করেছে।

এ বিষয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা পরিষদের সহকারী প্রকৌশলী আব্দুল হামিদ বলেন, আমি এ ব্যাপারে কিছু জানি না। তবে ওই এলাকার দায়িত্বপ্রাপ্ত সার্ভেয়ার বিষয়টি ভালো বলতে পারবেন।

জেলা পরিষদের সার্ভেয়ার রজব আলী বলেন, আমরা এরই মধ্যে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। শৌচাগারের সামনে দোকান নির্মাণ করা জায়গাটি কাউকে জেলা পরিষদ লিজ দেয়নি। তাদের বৈধ কোনো কাগজপত্রও নেই। এ বিষয়ে জড়িতদের চিঠি দেওয়া হবে।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌরসভার সচিব শামসুদ্দিন বলেন, জেলা পরিষদের জায়গায় গণশৌচাগারটি তৈরি করা আছে। নোংরা ও অপরিচ্ছন্ন থাকায় পরিষ্কার করতে বলেছি। আমরা কাউকে দোকান নির্মাণ করতে বলিনি।

Leave a Reply

Your email address will not be published.