সুদ ও ঘুষের বয়ান নয় বরং অসামাজিক কার্যকলাপে লিপ্ত থাকায় ইমামকে বরখাস্ত- মসজিদ কমিটি

অপরাধ

আশুলিয়া প্রতিনিধি :
সাভারের আশুলিয়া তালপট্টি এলাকায় মসজিদুল আকসা জামে মসজিদে সুদ ও ঘুষখোরের বিরুদ্ধে বক্তব্য দেওয়ায় দীর্ঘ ৮ বছরের কর্মরত ইমামকে বরখাস্ত ও এলাকা ছাড়া করেছেন ধামসোনা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আবদুল লতিফ মন্ডলের চাচাতো ভাই আকাশ মন্ডল।

এমন একটি খবর হটাৎ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ব্যাপক ছড়িয়ে পরেছে আশুলিয়া সহ সারাদেশে।

তারই ধারাবাহিকতায় সংবাদকর্মীরা ঘটনাস্থল তালপট্টি এলাকায় তথ্য সংগ্রহ করতে গেলে স্থানীয়দের তথ্যে ও সাক্ষাৎকারে উঠে আসে ভিন্ন চিত্র।

সুদ ও ঘুষের বয়ান করাই মসজিদের ইমাম জুনায়েদ হাবিব কে বরখাস্ত করা হয়েছে কি না, ঘটনার সত্যতা জানতে চাইলে ক্যামেরার সামনে হাজির হন স্থানীয় এক রিকশা চালক
মোঃ রেজাউল করিম জানান তার সাথে ইমামের প্রতারণার কথা। এবং অভিযোগ করে বলেন

গত দুই মাস আগে আমার ৮ বছর বয়সী ছেলে সন্তান অসুস্থ হয়েছিল, আমি তেল পানি পড়ার জন্য মসজিদের ইমাম সাহেবের কাছে যায়। ইমাম সাহেব তেলে ফু দিয়ে আমাকে বলেন আমার ছেলেকে নাকি জ্বীন-ভূতে ধরেছে। এটা ছাড়াতে গেলে পাঁচ হাজার টাকা লাগবে এবং টাকার কথা কাউকে বলা যাবেনা। আমি সরল বিশ্বাসে অনেক কষ্টে টাকা যোগাড় করে দিয়েছি কিন্তু কোন কাজ হয়নি। পর্বর্তীতে ডাক্তারের কাছে চিকিৎসা করে আমার ছেলে ভালো হয়েছে।

স্থানীয় এক ব্যাবসায়ী নাম বলতে অনিচ্ছুক অভিযোগ করে
বলেন, আমার সাথে ইমাম সাহেব প্রতারণা করেছেন। দীর্ঘদিন ধরে আমার স্ত্রীর সন্তান না হওয়ায় আমি হুজুরের সাথে বিষয়টি আলাপ করি তিনি আমাকে তার থেকে তাবিজ নেওয়ার পরামর্শ দেন এবং ১ মাসের মধ্যে অন্তঃসত্ত্বা হবেন বলে শতভাগ আশ্বস্ত করে মোটা অংকের টাকা হাদিয়া হিসেবে দাবি করেন। আমিও সরল বিশ্বাসে দিয়েছিলাম কিন্তু সন্তান তো দুরের কথা উল্টো আমার স্ত্রী অসুস্থ হয়ে পরেছিলেন। এরকম প্রতারণা আরও অনেকের সাথে করেছেন বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।

অন্যদিকে আল আকসা মসজিদের ইমাম জুনায়েদ হাবিবের কাছে ঘটনার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন! পবিত্র শবেবরাত উপলক্ষে ০৩ /০৭/২৩ ইং তারিখ মঙ্গলবার দিবাগত রাতে মসজিদে মুসল্লীদের উদ্দেশ্যে বিভিন্ন ইসলামিক বক্তব্য দেওয়ার পাশাপাশি সুদ ও ঘুষখোরের বিরুদ্ধে বক্তব্য দিতে গেলে ক্ষুব্ধ হয়ে মারপিটের উদ্দেশ্য মসজিদের মিম্বরের দিকে এগিয়ে যান আকাশ মন্ডল। এবং গালাগালি দিয়ে বক্তব্য বন্ধ করে তাৎক্ষনিক এলাকা ছেড়ে চলে যাওয়ার হুমকি দেন আমাকে। তাছাড়া আমার বিরুদ্ধে এখন যা গুজব ছড়ানো হচ্ছে
তা পুরোপুরি মিথ্যা বানোয়াট এবং বিষয়টি আমি থানায় মৌখিক ভাবে জানিয়েছি।

এদিকে মসজিদুল -আকসা জামে মসজিদ কমিটির উপদেষ্টা আকাশ মন্ডল ও সাধারণ সম্পাদক মোঃ আতাউর রহমান মিজান বলছেন ভিন্ন কথা। সুদ ও ঘুষের বিরুদ্ধে বয়ান নয় বরং বলৎকার তাবিজ বানিজ্য ও প্রতারণার মত বিভিন্ন অসামাজিক কার্যকলাপের সাথে জরিত থাকার প্রমাণ পাওয়ায় মসজিদ কমিটির সকল কার্যকারী সদস্যদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ইমাম জুনায়েদ হাবিব কে বরখাস্ত করা হয়েছে।

কিন্তু এতসব অসামাজিক কার্যকলাপের সাথে জরিত থাকার পরেও কিভাবে দীর্ঘ ৮ বছর ইমামতি করেছেন।
সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে ধামসোনা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আবদুল লতিফ মন্ডল ও মসজিদ কমিটির সদস্যরা বলেন এতদিন বিষয় গুলো জানাজানি হয়নি এখন তা জানার পরে তদন্ত সাপেক্ষে সত্যতা পাওয়া গেছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published.