Doinik Bangla Khobor

মোক্তারপুরে আগুনে পুড়ে ছাই : খেটে খাওয়া সাধারন মানুষ জহিরুলের ঘর

বিশেষ প্রতিনিধি :
কালীগঞ্জ উপজেলার মোক্তারপুর ইউনিয়নের মোক্তারপুর গ্রামের,, মৃত তৈয়ব আলীর পুত্র,, মোঃ জহিরুল এর তালা বদ্ধ ঘরে বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিটের মাধ্যমে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে,, প্রত্যক্ষদর্শী ইসমাইল হোসেন খান ,, দৈনিক বাংলাদেশ সমাচার কে বলেন,, আমি পাশের নির্মাণাধীন ভবনে দাঁড়িয়ে আছি,, তখন সকাল আনুমানিক ১০.১৫ মিনিট । এমতা অবস্থায় ওই টিনশেড ঘর থেকে আগুনের ধোয়া দেখতে পাই,, আমি ওই টিনশেড ঘরের জানালা দিয়ে উঁকি দিয়ে দেখি,, ভিতরে আগুন জ্বলতেছে,, তখন আমি লোকজনকে ডাকাডাকি করি এবং আশেপাশের লোকজন ছুটে আসে,, ও আগুন নিভানোর জন্য ছুটাছুটি করে।
পাশের নির্মাণাধীন ভবনের সেপটিক ট্যাংকের পানি দিয়ে আগুন নেভানোর চেষ্টা চালায় এলাকাবাসী,, মোঃ জাকির হোসেন দৈনিক বাংলাদেশ সমাচার কে বলেন,, আমি জহিরুলের বাড়িতে আগুন লাগার খবর শোনার সাথে সাথে ঘটনাস্থলে ছুটে আসি,, এবং আগুন নেভানোর কাজে নেমে পড়ি,, আমার সাথে অনেকেই আগুন নেভানোর জন্য জীবন বাজি রেখে প্রাণপণ চেষ্টা চালিয়েছে,, জামির,, জামান,, সুমন,, কাশেম,, শামিম ,,নাঈম,, মুজিবুর ,,শহীদুল,, রফিকুল ,,মনির,, সজীব ,,আকরাম,, ফাতেমা,, আকলিমা,, নাজমা,, কুলসুম,, সহ অর্ধশতাধিক এলাকাবাসী(পুরুষ ও মহিলা) আগুন নেভানোর চেষ্টা চালাই। ঘটনাস্থল থেকে ৯৯৯ এ ফোন করে ফায়ার সার্ভিসকে খবর দেওয়া হলে,, ঘোড়াশাল ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন ইনচার্জ শামীম হোসেনের নেতৃত্বে ঘটনাস্থলে ফায়ার সার্ভিসের ৮ সদস্য বিশিষ্ট একটি ইউনিট ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন,, এবং আগুন সম্পূর্ণভাবে নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসেন।
ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন ইনচার্জ শামীম হোসেন,, দৈনিক বাংলাদেশ সমাচার কে বলেন,, আমরা ১০.২৯ মিনিটে খবর পাই এবং ১০.৩০ মিনিটে আমরা স্টেশন ত্যাগ করি,, এবং ঘটনাস্থলে এগারোটার সময় উপস্থিত হই। আল্লাহর অশেষ রহমত থাকায় ও এলাকাবাসী দ্রুত আগুন নেভানোর চেষ্টা করায়,, অতি অল্প সময়ের মধ্যেই আমরা ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা আগুন সম্পূর্ণরূপে নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসতে পারলাম,,,ইনশাআল্লাহ , আমরা প্রাথমিক ধারণা করতেছি এটা বৈদ্যুতিক শটসার্কিট থেকে এই আগুনের সূত্রপাত! ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ জানতে চাইলে তিনি বলেন,, প্রাথমিকভাবে আমরা প্রায় পাঁচ লক্ষাধিক টাকার ক্ষয়ক্ষতির আসংখ্যা করছি।
স্টেশন ইনচার্জ শামীম হোসেন,, উপস্থিত লোকদের উদ্দেশ্যে বলেন,, আমরা জনগণের সেবক,, সরকার আমাদের বেতন দেয়,, আপনাদের বাসা বাড়িতে যদি কোন অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটে। যে কোনো অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনায় আপনারা ফায়ার সার্ভিসের হটলাইনে ১৬১৬৩ নাম্বারে কল করবেন।আমরা ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা সার্বক্ষনিক আপনাদেরকে সেবা দেওয়ার জন্য প্রস্তুত আছি,, আমরা আমাদের কাজের বিনিময়ে আপনাদের কাছ থেকে কোন প্রকার অর্থ নেব না,, বা নেই না। যদি কেউ ফায়ার সার্ভিসের কাজের জন্য টাকা দাবি করে। তাহলে ওই ব্যক্তি কে ধরিয়ে দিন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাছে।
আগুনে পুড়ে ছাই জহিরুলের বাড়ি,, ঘরের ভিতরে থাকা সকল জিনিসপত্র,, স্বর্ণ অলংকার,, নগত টাকা,,
খাট,, শোকেস,, পরিধানের কাপড় ,, ছেলেদের লেখা পড়ার বই সহ ,, সবকিছু যখন পুড়ে ছাই,, জহিরুল তখন অজ্ঞান ,,সেই অবস্থায় তার মাথায় পানি ঢালা হচ্ছে,, জহুরুলের স্ত্রী খুরশিদা বেগম ও অজ্ঞান। স্কুলপড়ুয়া দুটি ছেলে,, শাহেদ ও শাহাদাত তখন স্কুলে বাড়িতে আগুন লাগার খবর পেয়ে স্কুল থেকে বাড়ি ছুটে আসে। অবশিষ্ট আর কিছুই পেল না। জ্ঞান ফিরে আসলে জহিরুল দৈনিক বাংলাদেশ সমাচার এর মাধ্যমে,, সমাজের সকল বিত্তবান ব্যক্তি,,মেম্বার,, চেয়ারম্যান ,,সহ সকলের কাছে সাহায্যের আবেদন জানিয়েছেন। জহিরুল এর মোবাইল নাম্বার,,
০১৯৫২৯২৫৩৯৮,
মোক্তারপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এসএম আলমগীর হোসেন বাংলাদেশ সমাচার কে জানান,,
জহিরুলের বাড়িতে বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিটের আগুন লাগার ঘটনা টা শোনার সাথে সাথেই,, আমি পল্লী বিদ্যুতের ডিজিএম কে ফোন করি এবং তাৎক্ষণিক বিদ্যুৎ বন্ধ করে দেওয়ার জন্য বলি। আমি জরুরী কাজে কালীগঞ্জের বাহিরে থাকার কারণে,, ঘটনাস্থলে উপস্থিত হতে পারি নাই। ইনশাআল্লাহ,, জরুরি কাজ শেষ করে আমি জহিরুল ও তার পরিবারের সাথে দেখা করব। আমি আমার ব্যক্তিগত তহবিল হতে,, ও ইউনিয়ন পরিষদের বরাদ্দকৃত অর্থ হতে,, জহিরুল ও তার পরিবারের জন্য সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিব। আমি আমার ইউনিয়নের কোন পরিবারকেই মৌলিক চাহিদা হতে,, বঞ্চিত হতে দেব না ইনশাআল্লাহ।