Doinik Bangla Khobor

চট্রগ্রামে মন্ত্রীকে পেয়ে ক্ষোভ ঝাড়লেন এবং বক্তব্য বার বার থামিয়ে দিলেন চেয়ারম্যান- ভাইস চেয়ারম্যানরা  


বিশেষ প্রতিনিধি :
বাংলাদেশ উপজেলা পরিষদ অ্যাসোসিয়েশনের প্রথম বিভাগীয় সম্মেলনে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলামকে পেয়ে নিজেদের ক্ষোভ-অভিমান উগরে দিলেন উপজেলা চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যানরা। এমনকি সম্মেলনে মন্ত্রীর বক্তব্য চলাকালেই তাকে কয়েক দফা থামিয়ে নিজেদের দাবির কথা তুলে ধরেন তারা। নিজেদের দাবির পক্ষে স্লোগানও দিতে দেখা গেছে উপজেলা চেয়ারম্যান-ভাইস চেয়ারম্যানদের। এতে সম্মেলনস্থলে বিশৃঙ্খল পরিবেশ সৃষ্টি হয়।

শনিবার (১৮ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় চট্টগ্রামের এলজিইডি ভবনে বাংলাদেশ উপজেলা পরিষদ অ্যাসোসিয়েশনের চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিটির সম্মেলনে এ ঘটনা ঘটে।

বিকেল ৩টায় সম্মেলনের শুরু থেকেই নিজেদের দাবি-দাওয়া তুলে ধরে বক্তব্য দেন উপজেলা চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যানরা। তারা তাদের না পাওয়ার বেদনা ও বিভিন্ন ক্ষেত্রে অবমূল্যায়ন ও অপদস্থ হওয়ার বিবরণ তুলে ধরেন। বক্তারা তাদের বিভিন্ন সমস্যা ও প্রতিবন্ধকতা তুলে ধরে তা সমাধানের জন্য মন্ত্রীর প্রতি বারবার আহ্বান জানান।

পরে এলজিআরডি মন্ত্রী তাজুল ইসলাম প্রধান অতিথির বক্তব্য শুরুর কয়েক মিনিটের মাথায় কয়েকজন উপজেলা চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান উঠে দাঁড়িয়ে তাদেরকে আরও কিছু কথা বলতে দেয়ার অনুরোধ জানান। মঞ্চ থেকে বারবার মন্ত্রীর বক্তব্য শেষ করার জন্য সময় চাওয়া হলেও তারা তা শোনেননি। একপর্যায়ে মন্ত্রীকে থামিয়ে তারা নিজেদের বিভিন্ন দাবি-দাওয়ার কথা বলতে থাকেন। উপস্থিত অন্যরা তাদের দাবির পক্ষে হাততালি ও স্লোগান দিয়ে সমর্থন জানান। এতে সম্মেলন স্থলে বিশৃঙ্খল অবস্থা তৈরি হয়।

মন্ত্রীর বক্তব্য চলাকালেই রাঙ্গামাটির মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান নাসরিন ইসলাম মাইক হাতে নিয়ে বলেন, স্যার আমার একটা কথা আছে। প্রধানমন্ত্রী আমাদের ১৭টা বিষয়ে অধিকার দিয়েছেন। কিন্তু আমরা তা অবহিত নই। আমরা নির্বাচিত প্রতিনিধি, কিন্তু আমাদের হাতে একটি কম্বল বিতরণেরও সুযোগ নেই। জনগণ কি এসব বোঝে? তারা আমাদের কাছে এটা চায় ওটা চায়, অথচ আমাদের হাতে কিছু নাই


মন্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে হাটহাজারীর মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান মুক্তার বেগম বলেন, আপনাকে আমাদের কথা শুনতেই হবে। মহিলা ভাইস চেয়ারম্যানদের জন্য কোনো গাড়ির ব্যবস্থা নেই। প্রায়ই আমাদের পুরুষ চেয়ারম্যান বা ভাইস চেয়ারম্যানদের সঙ্গে সিএনজি শেয়ার করতে হয়। এ জন্য সমাজের মানুষ আমাদের নিয়ে নানা মন্তব্য করে। এ অসম্মান সইবার মতো নয়। হয় আমাদের সুযোগ-সুবিধা দেয়া হোক। অন্যথায় এ পদটা বিলুপ্ত করা হোক।

এলজিআরডি মন্ত্রী উত্তরে বলেন, এসব কথা শোনা হয়েছে। আমি উত্তর দিয়েছি। আপনারা চিন্তা করছেন, এখানে সব সমস্যার সমাধান হয়ে যেতে হবে। এভাবে যদি মনে করেন তাইলে কোনো সমস্যার সমাধান হবে না। লেট মি প্লিজ ..। আপনাদের অনেকগুলো সমস্যার নোট নিয়েছি, যেগুলো নিয়ে আমরা কাজ করব। কেমন ঠিক আছে?

তিনি তাদের উদ্দেশ্যে বলেন, আর কথা বলা যাবে না। আপনাদের বুঝতে হবে। আমাদেরকে একটি অবস্থার মধ্য দিয়ে আস্তে আস্তে এগিয়ে যেতে হবে। এখন আমি হুট করে কিছু কথাবার্তা বলে দিলাম। একটা সাংঘর্ষিক অবস্থা সৃষ্টি হবে এবং সেগুলো শেষ পর্যন্ত ফল দেবে না, এটা করা কি ঠিক হবে? আপনাদের কথাগুলো আমার কাছে স্পষ্ট। আমি সেগুলো নোট নিয়েছি।

রাউজান উপজেলা চেয়ারম্যান এহসানুল হায়দার বাবুলর সভাপতিত্বে সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন- স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতরের প্রধান প্রকৌশলী সুসংকর চন্দ্র আচার্য, বাংলাদেশ উপজেলা পরিষদ অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি হারুনর রশীদ হাওলাদার, সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম বিরু প্রমুখ।