Doinik Bangla Khobor

বগুড়া সোনাতলায় দিন দুপুরে সুখদহ নদী থেকে মাটি চুরি—

বিশেষ প্রতিনিধি :
বগুড়ার সোনাতলায় দিন দুপুরে সুখদহ নদীর দু’পাশ থেকে এক শ্রেণীর স্বার্থান্বেষী মানুষ ট্রলি দিয়ে মাটি তুলে নিয়ে গিয়ে অন্যত্র বিক্রি করছে। এতে করে নদীর পার্শ্ববর্তী আবাদী জমি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাওয়ার আশংকা করা হচ্ছে। এ বিষয়ে স্থানীয় লোকজন একাধিকবার পানি উন্নয়ন বোর্ড ও সংশ্লিষ্ট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা দপ্তরে অভিযোগ করেও কোন ফল হয়নি।
বগুড়ার সোনাতলা উপজেলার জোড়গাছা ইউনিয়নের সর্জনপাড়া এলাকায় বাঙালী নদী থেকে ঠাকুরপাড়া পর্যন্ত প্রায় ৪ কিলোমিটার নদী পানি উন্নয়ন বোর্ড প্রায় ২ কোটি টাকা ব্যয়ে ৬/৭ মাস পূর্বে খনন করেন। এতে করে এলাকাবাসীর মাঝে স্বস্তি ফিরে আসে। নদীটি খনন করার ফলে কৃষক তাদের উৎপাদিত ইরি-বোরো, আলু-মরিচ, গম-সরিষা, ভুট্টা সহ বিভিন্ন ফসলের জমিতে খুব সহজেই দিতে পাচ্ছে। এছাড়াও মানুষ ও গবাদি পশু গোসল করতে পাচ্ছে। এছাড়াও নদীটি খননের ফলে নদীর উপকুলীয় মানুষগুলো নদীভাঙনের কবল থেকে রক্ষা পেয়েছে।
সম্প্রতি এক শ্রেণীর মুনাফালোভী মানুষ ওই সুখদহ নদীটির দু’পাশ থেকে ট্রলি দিয়ে মাটি তুলে অন্যত্র নিয়ে গিয়ে বিক্রি করছে।
স্থানীয় লোকজন জানান, দিনে ২০-২৫টি ট্রলি প্রতিনিয়ত নদীর দু’পাশ থেকে মাটি তুলে নিয়ে গিয়ে অন্যত্র বিক্রি করছে।
এ বিষয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন ট্রলি চালক জানান, তারা ভাড়ায় এ কাজটি করছে। প্রতি ট্রলি মাটি ৫শ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ট্রলি চালকদের দেয়া হচ্ছে মাত্র দেড় শত টাকা। তবে নদীর দু’কূল থেকে মাটি সরিয়ে ফেলা কিংবা বিক্রির মূল হোতা এলাকার প্রভাবশালী ব্যক্তিরা।
এছাড়াও স্থানীয় লোকজন আরও জানান, জনৈক এক জনপ্রতিনিধির পরিবারের সদস্যরা নির্বিগ্নে এ কাজ চালিয়ে যাচ্ছে।
নদীর দু’পাশ থেকে এভাবে মাটি সরিয়ে ফেলায় সামান্য ঝড়-বৃষ্টি ও বন্যার পানির স্রোতের তোড়ে দু’কুল ভেঙ্গে শতশত একর ফসলী জমি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাওয়ার আশংকা করছে তারা।
এ ব্যাপারে স্থানীয় একাধিক মাটি চুরির কাজে নিয়োজিত ব্যক্তিরা জানান, নদীর পাশে তাদের জমি থাকায় তারা নির্বিগ্নে মাটি বিক্রির কাজ চালিয়ে যাচ্ছে।
এ ব্যাপারে সোনাতলা থানার ওসি আব্দুল্লাহ আল মাসউদ চৌধুরীর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, এ বিষয়ে কেউ তাকে অবগত করেননি।
এ দিকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ শফিকুর আলম জানান, বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় লোকজন একাধিকবার মোবাইল ফোনে ও লিখিত ভাবে বিষয়টি তাকে অবগত করেছে। তিনি আরও জানান, যেকোন সময় আমরা ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করে দোষীদের শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
উল্লেখ্য, নির্বিগ্নে এভাবে নদীর দু’পাশ থেকে মাটি সরিয়ে ফেলায় সরকার যে উদ্দেশ্য নদী খনন করেছে সরকারের সেই উদ্দেশ্য ব্যাহত হবে।