পুলিশের মোবাইল নাম্বার ক্লোন করে প্রতারণা,দু’জন গ্রেফতার

অপরাধ

নিজস্ব সংবাদদাতা :
সদ্য শেষ হওয়া সিটি করপোরেশন নির্বাচনে তিন কাউন্সিলর প্রার্থীকে জিতিয়ে দেয়ার আশ্বাসে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) দুই থানার অফিসার ইনচার্জের (ওসি) মোবাইল ফোন নম্বর ক্লোন করে অর্থ আত্মসাৎকারী চক্রের দুই সদস্যকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

পুলিশ বলছে, প্রতারক চক্রটি বিশেষ দুটি অ্যাপ ব্যবহার করে সরকারি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও থানার ওসিদের নম্বর ক্লোন করে দীর্ঘদিন ধরে সাধারণ মানুষের কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নিচ্ছিল। ২০১৭ সাল থেকে এ পর্যন্ত বিভিন্ন কর্মকর্তার মোবাইল ফোন নম্বর ক্লোন করে অন্তত ৮১১টি প্রতারণা করেছে তারা।

৯ ফেব্রুয়ারি রোববার রাজধানীর একাধিক স্থানে পৃথক অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতাররা হলেন- চক্রের মূলহোতা সাইদুল ইসলাম বিপ্লব ও তার সহযোগী পলাশ ইসলাম।

এ সময় তাদের কাছ থেকে বিভিন্ন মোবাইল ফোন অপারেটরের ২৯টি সিম, মোবাইল, ব্যাংকের চেক, নগদ ৪০ হাজার টাকা ও ১ হাজার ২০০ মার্কিন ডলার উদ্ধার করা হয়েছে।

ডিএমপির তেজগাঁও বিভাগ সূত্রে জানা যায়, গত ১৯ জানুয়ারি ডিএনসিসির ৩০ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী আবুল কাশেমকে এবং ২২ জানুয়ারি একই ওয়ার্ডের ইয়াছিন মোল্লাকে আদাবর থানার ওসির মোবাইল নম্বর থেকে ফোন দিয়ে নির্বাচনে জিতিয়ে দেয়ার প্রস্তাব দেয় প্রতারকরা। বিনিময়ে দুজনের কাছ থেকে ১৫ লাখ টাকা দাবি করেন তারা। এতে দুই প্রার্থী টাকা দিতে রাজি হন। তাদের মধ্যে আবুল কাশেম সাত লাখ এবং ইয়াছিন মোল্লা পাঁচ লাখ টাকা বিকাশ, নগদ ও রকেটের মাধ্যমে পরিশোধ করেন।

দু’দিন পর ২৪ জানুয়ারি ৩১ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী ডেইজি সারোয়ারকে মোহাম্মদপুর থানার ওসির নম্বর থেকে ফোন দেয়া হয়। তার কাছেও মোটা অংকের টাকা দাবি করেন প্রতারকরা। তিনিও একই কায়দায় পাঁচ লাখ টাকা দেন।

পরে দ্বিতীয় দফায় আবারো টাকা চাইলে ওই তিন প্রার্থী বুঝতে পারেন, তারা প্রতারিত হয়েছেন। এরপর তারা পৃথকভাবে বিষয়টি থানা পুলিশকে জানান। তিনজনই এ ঘটনায় মামলা করেন।

এ বিষয়ে ডিএমপির তেজগাঁও বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) বিপ্লব বিজয় তালুকদার জানান, মোহাম্মদপুর ও আদাবর থানার ওসির নম্বর ক্লোন করে চক্রটি তিনজন কাউন্সিলর প্রার্থীর কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ টাকা হাতিয়ে নেয়। এ ঘটনার অনুসন্ধানে ফেনী, কুমিল্লা, নোয়াখালী, চট্টগ্রামসহ বেশ কয়েকটি জেলায় অভিযান চালানো হয়।

তদন্তের ধারাবাহিকতায় রাজধানীর হাজারীবাগ এলাকা থেকে প্রথমে সাইদুল ইসলামকে গ্রেফতার করা হয়। পরে তার দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে পলাশ ইসলামকে গ্রেফতার করে পুলিশ।

চক্রটি বিশেষ দুটি অ্যাপ ব্যবহার করে ২০১৭ সাল থেকে এখন পর্যন্ত পুলিশসহ বিভিন্ন কর্মকর্তার মোবাইল নম্বর ক্লোন করে ৮১১টি প্রতারণা করেছে বলেও জানান তিনি।

Leave a Reply

Your email address will not be published.