দলিল লিখক থেকে ইউপি মেম্বার,সাংবাদিকতার আড়ালে চাঁদাবাজী

অপরাধ

বিশেষ প্রতিবেদক :
কুমিল্লার দাউদকান্দি উপজেলার বারপাড়া ইউনিয়নের সাতপাড়া গ্রামের মৃত হাকিম বেন্ডারের ছেলে ইউপি মেম্বার আনিছুর রহমান খাঁন (৪৫) এর বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ উঠেছে। তিনি তার বাবার পেশার সুবাদে এক সময় নিজেই জড়িয়ে পড়েন দলিল লেখার কাজে দলিল লেখক হিসেবে।

বিশ্বস্ত সূত্রে জানা যায়, গৌরীপুর সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে দলিল লেখক কাজের ফাঁকে অত্যন্ত সু-কৌশল অবলম্বন করে ইউপি নির্বাচন করে এক পর্যায়ে উপজেলার বারপাড়া ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডের ইউপি মেম্বার হন তিনি। আনিছুর রহমান খাঁন একজন লোভী প্রকৃতি স্বভাবের লোক। তাই দলিল লেখন, ইউপি মেম্বার ছাড়াও তিনি নাকি পাসপোর্ট দালালি,গ্যাস লাইনের কাজের দালালি, এনআইডিতে নাম সংশোধন সহ আরো বেশকিছু অবৈধ তদবীর কাজে জড়িয়ে নিজেকে সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে দাপটের সাথে চষে বেড়াচ্ছেন বলে অনুসন্ধানে জানা যায়। তার বিরুদ্ধে গত ২৭ জানুয়ারী দাউদকান্দি মডেল থানায় গণমুক্তি পত্রিকার দাউদকান্দি প্রতিনিধি মো: মনের হোসেন নামে এক সংবাদকর্মী ইউপি মেম্বার আনিছুর রহমান খাঁনের বিরুদ্ধে একটি লিখিত অভিযোগপত্র দায়ের করেছেন।

এ বিষয়ে সাংবাদিক মনির হোসেন বলেন, গত ২৬ জানুয়ারী সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় ইউপি মেম্বার আনিছুর রহমান খাঁন বন্ধু পরিচয়ে আকষ্মিকভাবে আমার বাড়িতে অনধিকার প্রবেশ করে আমার ঘরের বিভিন্ন কক্ষে উঁকিঝুঁকি দেয়। আমি তাকে প্রশ্ন করলে সে বলে বিষের রোগী কোথায়? এই বলে সে তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোনে লাইভে এসে আমাকে ও আমার পরিবার নিয়ে মিথ্যা অপবাদ দেয় এবং আমাকে হেয়প্রতিপন্য করে। আমি তাকে বারণ করলে সে আমার উপর ক্ষিপ্ত হয় আমাকে গালমন্দ করে প্রাণনাশের হুমকি দেয়। একপর্যায়ে সে লোকজনের ধাওয়া খেয়ে পালিয়ে যায়। সে মূলত: একজন দলিল লেখক এবং বর্তমানে বারপাড়া ২নং ওয়ার্ডের একজন ইউপি মেম্বর হিসেবে এলাকার মানুষ জানেন। সে প্রায় সময় সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে বিভিন্ন অসহায় লোকদের নিকট থেকে অন্যায় ভাবে চাঁদা দাবী করে থাকে বলেও জানা যায়।

এবিষয়ে জানতে চাইলে বারপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাজহারুল ইসলাম মানিক সওদাগর জানান, আমার ইউনিয়ন পরিষদের কোন ব্যক্তি বা কোন ইউপি মেম্বার যদি কোনপ্রকার অন্যায় কাজে জড়িয়ে পড়ে তা প্রমাণিত হলে আমরা তার যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহনে কোন প্রকার ছাড় দিবোনা।

এ বিষয়ে অভিযুক্ত মেম্বার আনিছুর রহমান মুঠোফোনে বলে আপনি আমাকে মাল খাইয়া কল করেছেন। পরে তিনি কেটে দেন।

দাউদকান্দি মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ মোজাম্মেল হক বলেন, ইউপি মেম্বার আনিছুর রহমান খাঁন একজন খারাপ প্রকৃতির লোক। তার বিরুদ্ধে থানায় অসংখ্য চাঁদাবাজীর মামলা রয়েছে। আমরা অচিরেই অভিযুক্ত কথিত সাংবাদিক নামধারী ইউপি মেম্বার আনিছুর রহমান খাঁনের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিচ্ছি।

এছাড়াও জানাযায়, কথিত সাংবাদিক পরিচয়ধারী ইউপি মেম্বার দলিল লেখক আনিছুর রহমান খাঁন সাংবাদিকতা পেশাকে পুঁজি করে বিভিন্ন সরকারি বেসরকারি দপ্তরে গিয়ে সাধারণ মানুষকে ফাঁদে ফেলে মোটা অংকের চাঁদা দাবী করে এলাকায় একজন দুষ্কৃতিকারী ব্যক্তি হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published.