একাধিক মামলার আসামী আবুল কালাম গংদের তান্ডবে ৩ পরিবার দেড়মাস যাবৎ পানি ও বিদ্যুত থেকে বঞ্চিত

অপরাধ

আবদুল আলী :
ভূমির মালিকানা নিয়ে বিরোধের জেরে প্রায় দেড় মাস ধরে পানি ও বিদ্যুত সুবিধা থেকে বঞ্চিত গুইমারা উপজেলার বড়পিলাক গ্রামের প্রবাসী ৩ পরিবার।তাঁদের পানি ও বিদ্যুতের লাইন কেটে দিয়েছে প্রভাবশালী প্রতিবেশী প্রতিপক্ষ হত্যাচেষ্টা, ভূমি জবর দখল ও চুরিসহ একাধিক মামরার আসামী আবুল কালাম গংরা। ফলে পবিত্র রমজান মাসেও শতবর্ষী বৃদ্ধসহ চরম মানবেতর জীবন যাপন করছে অসহায় এই পরিবার গুলো।

মানুষের বেঁচ থাকার জন্য প্রধান ও মৌলিক উপাদান পানি। সব প্রাণেরই উৎস পানি এবং সবাই পানির ওপর নির্ভরশীল।পানি ছাড়া মানুষ কিংবা জীবজন্তু,এমনকি কোনো উদ্ভিদও বাঁচতে পারে না।পানি ছাড়া জীবনের অস্তিত্ব কল্পনাও করা যায় না। পানির অপর নাম জীবন।এমন একটি স্পর্শকাতর উপকরন থেকে দীর্ঘ প্রায় দেড় মাস যাবত বঞ্চিত প্রবাসী অসহায় ৩ পরিবার।
এলাকার গন্যমান্য ব্যক্তিসহ জনপ্রতিনিধি,রাজনৈতিক ব্যক্তি এবং প্রশাসনের ধারে ধারে ধর্ণা দিয়েও কোনো সুরাহা পাচ্ছেন না অসহায় এই পরিবার গুলো।
সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, লুৎফা বেগম,নাজিম উদ্দিন এবং জুহর আলী প্রবাসী এই ৩ পরিবারের সাথে কথিত আওয়ামী লীগ নেতা আবুল কালাম ভূমির মালিকানা নিয়ে বিরোধ চালিয়ে যাচ্ছে।এর জের ধরে কথিত এ নেতা আবুল কালাম প্রায় দেড় মাস পূর্বে প্রবাসী পরিবারের পানির সাবমারসিবল পাম্পের পাইভ এবং বিদ্যুত সার্ভিসের লাইন কেটে দেয়।বার বার চেষ্টা করেও তাঁরা পানির পাইভ এবং বিদ্যুত সংযোগ দিতে পারছেন না।

ভূক্তভুগী প্রবাসী পরিবার লুৎফা বেগম জানান,৩টি পরিবারের ১৫জন সদস্য,তাঁর মধ্যে আমার শতবর্ষী শশুর রয়েছে।দীর্ঘ দিন ধরে তিনি বিছানায় প্রসাব পায়খানা করে।পানির অভাবে আমার শশুরকে সঠিক সময়ে পরিস্কার করতে পারছি না।পবিত্র রমজান মাসেও আমরা চরম মানবেতর জীবন-যাপন করছি। এ বিষয়ে মাটিরাঙ্গা আবাসিক প্রকৌশলী (বিদ্যৎ)’র নিকট অভিযোগ করি এবং গুইমারা থানায় বারবার অভিযোগ করি,কিন্তু কোনো ফল আসেনি। রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে সে পার পেয়ে যাচ্ছে। আমরা এর সুবিচার চাই।

এলাকার প্রবীণ শতবর্ষী মুরুব্বি আব্দুল হাই মুন্সি বলেন,প্রায় ৩০বছর যাবত লুৎফা বেগম ও নাজিম উদ্দিনরা এই জায়গায় বসবাস করছে। তাঁদের সাথে প্রতিবেশীর এমন ঘটনা মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘন। এর কঠিন বিচার হওয়া উচিত।

এবিষয়ে ৬নং ওয়ার্ড মেম্বার মো: ছানা উল্যাহ জানান,আমরা এলাকার গন্যমান্য ব্যক্তি এবং ইউপি চেয়ারম্যানসহ বেশ কয়েকবার দেন দরবার করেও কোনো সুরাহা করতে পারেনি।আবুল কালামগংরা কারো কথাই শুনতে চাইনা।

হাফছড়ি ইউপি চেয়ারম্যান মংশে চৌধুরী বলেন, সে অত্যান্ত ধূর্ত প্রকৃতির লোক।অত্র ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান চাইথোয়াই চৌধুরী এবং আমি,তর্কিত ভূমির বিরোধ নিস্পত্তির জন্য এলাকাবাসী সহ অনেকবার চেষ্টা করেছি।পানি এবং বিদ্যুতের বিষয়ে বার বার বলার পরও সে আমাদের কথা শুনছে না।

অভিযোগের বিষয়ে আবুল কালামের কাছে জানতে চাইলে,তিনি তাঁর বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ অস্বীকার করলেও তার কথা বার্তায় পানিও বিদ্যুৎতের লাইন তার ইঙ্গিতে কেটেছে বলে ধারনা পাওয়া গেছে।

এই বিষয়ে গুইমারা থানার অফিসার ইনচার্জ রাজিব চন্দ্র কর বলেন,তাঁর বিরুদ্ধে একাধিক মামলা রয়েছে ।ইতিপূর্বে তাকে আমরা গ্রেফতার করে আদালতে প্রেরণ করেছি। জামিনে বের হয়ে সে আবার অপরাধ করছে, খুব দ্রুত পানি ও বিদ্যুৎ বিহীন পরিবারে সংযোগ দেওয়ার ব্যাবস্হা গ্রহন করে শক্ত আইনানুগ ব্যাবস্থা নিব।

উল্লেখ্য ইতিপূর্বে তার বিরুদ্ধে হত্যা চেষ্টা, ভুমি জবর দখল ও গাছ কাটার অপরাধে গুইমারা থানায় তিনটি মামলা রয়েছে। যার নং৩৭৭/২৩ তারিখ ১০/০১/২০২৩ ও ১/১৮ তারিখ ১৯ নভেম্বর ২০২০ইং।

Leave a Reply

Your email address will not be published.